ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ‘টর্চার সেল’ বানিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

comilla satroleg bashirকুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কবি নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বশির উল্লাহর বিরুদ্ধে হলের নিজ কক্ষে ‘টর্চার সেল’ বানিয়ে ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সময়ে বশিরের হাতে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার সহপাঠীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ওই কথিত ‘টর্চার সেলে’ তিনি ছাত্রদের মারাধরের জন্য জালি বেত কিনে এনেছেন। জালি বেতে না হলে ভাঙ্গা বেঞ্চের পায়া দিয়ে পেটানো হয়। তার নির্যাতন থেকে সাংবাদিক, নিরীহ ছাত্র, ছাত্রদল এমনকি ছাত্রলীগ কর্মীরাও বাদ যায়নি। ছাত্রত্ব শেষ হলেও হল ছাড়ছেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। সহপাঠীদের নিকট বশির বলে বেড়ান, একটা খুন করে তিনি লাইম লাইটে আসতে চান। ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় রবিবার (৯ অক্টোবর) তার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ জানায় শিক্ষার্থীরা।
ব্যবস্থাপনা বিভাগ অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম জিকু জানান, গত ৩ অক্টোবর বিকালে বশিরের ২৬০ নম্বর কক্ষে সাইফুল ইসলাম নামের এক ছাত্রকে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করতে নিয়ে যাওয়া হয়। জিকু ওই কক্ষে গিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করলে বশির, তার সহযোগী হল ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ মজুমদার, সদস্য শহীদুল ইসলাম শাহীন, বেনী আমিন সুমন, তৌহিদ, তানভীর, আনোয়ারসহ অন্যান্যরা তাকে বেদম প্রহার করে। কিছুদিন আগে ব্যবস্থাপনা বিভাগ ৩য় বর্ষের হিরণকে খাবার খাওয়া অবস্থা থেকে তুলে নিয়ে জালি বেত দিয়ে পেটানো হয়। তারপর তার কাছ থেকে ২১শ’ টাকা ‘জরিমানা’ নিয়ে নিজেরা ভাগ করে নেয়।
বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা গেছে, ৭ জুন ব্যবস্থাপনা বিভাগ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জুয়েলকে বেঞ্চের পায়া দিয়ে পেটানো হয়। হলের সোহেল, আরিফ, সৌরভ, জাহিদকে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করে বশির। এছাড়া ২৪ আগস্ট ভিক্টোরিয়া কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তৈয়বুর রহমান সোহেলকে লাঞ্ছিত করে বশির। হলের ৪ শতাধিক ছাত্র তার উৎপাতে অতিষ্ট বলে সাধারণ ছাত্রদের অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে।
এদিকে কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, এক বছর আগে বশির হল ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ছিল। ছাত্রলীগে এসেই সে বেপরোয়া হয়ে উঠে।
এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বশির উল্লাহ বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। ‘বেয়াদবি’ করায় তিনি জিকুকে শাস্তি দিয়েছেন। সংগঠনের বড় ভাই হিসেবে তিনি সেটা করার অধিকার রাখেন বলেও মন্তব্য করেন।

comilla victoria college jiko

ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী সায়েম বলেন, “এটা বড় কোনও ঘটনা নয়। নিজেদের মধ্যে ‘গ্যাঞ্জাম’ হয়েছে। হলের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। বশিরকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুর রশীদ বলেন, ‘বশিরের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। ছাত্ররাও একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। হল সুপারকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।’

/এসএ/