বরিশালে তালিকাভুক্ত ইটভাটার এক-তৃতীয়াংশ অবৈধ

কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোয় একটি অননুমোদিত ইটভাটার ড্রাম চিমনি ভেঙে দেওয়া হচ্ছেবরিশাল বিভাগের তালিকাভুক্ত ইটভাটার এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অবৈধ। কোনও ধরনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই এসব ইটভাটায় উৎপাদিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ইট। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। আর তালিকাভুক্ত ইটভাটার বাইরেও রয়েছে আরও অনেক ইটভাটা। পরিবেশ অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রেই এ তথ্য জানা গেছে। তবে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর।
পরিবেশ অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিভাগে তালিকাভুক্ত ইটভাটার সংখ্যা ৩১০টি। এর মধ্যে অনুমোদন রয়েছে ১৮৯টির ইটভাটার। এর বাইরে ১২১টি ইটভাটার কোনও অনুমোদন নেই। আবার তালিকাভুক্ত নয়, বরিশালে এমন ইটভাটার সংখ্যা কমপক্ষে ৭০।
বরিশাল পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনুমোদিত ইটভাটাগুলো জিগজ্যাগ পদ্ধতি অনুসরণ ও কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোসহ নানা আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। তালিকার বাইরে অত্যাধুনিক হফম্যান কিলন পদ্ধতির দুইটি ইটভাটা ভোলায় স্থাপিত হয়েছে। এই ইটভাটাগুলো পরিবেশবান্ধব।’
এছাড়া ঝালকাঠির নলছিটিতে একটি ও পটুয়াখালির দুমকীতে একটি ইটভাটা পরিবেশ ছাড়পত্র নিলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারেনি বলে জানান রাশেদুজ্জামান।
সব মিলিয়ে বরিশালে তালিকাভুক্ত ইটভাটার ১২১টির কোনও অনুমোদন নেই। সরকারের প্রচলিত নিয়ম না মানায় পরিবেশ অধিদফতর তাদের ছাড়পত্রও দিচ্ছে না। এসব ইটভাটার অধিকাংশই কাঠ দিয়ে ইট পেড়াচ্ছে। ফলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তালিকার বাইরের ইটভাটাগুলোর অবস্থাও একইরকম বলে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্র।
তবে বরিশালের অননুমোদিত ও অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান রাশেদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা এসব ইটভাটাগুলোতে নোটিশ দিচ্ছি। তাদের নিয়মিত জরিমানাও করছি।’
রাশেদুজ্জামান জানান, গত ১২ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভাগের ১৬টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভেঙে দেয়া হয়েছে ড্রাম চিমনি। জরিমানা করা হয়েছে ১৩ লক্ষ টাকা। আগামীতে এই অভিযান আরও কঠোরভাবে পরিচালিত হবে বলে জানান পরিবেশ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি আক্কাস হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ক্যাব দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছে। এই ইটভাটাগুলো বন্ধ হোক, আমরা এটাই চাই।’

/টিআর/