ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে প্রভাষক নিয়োগে ঘুষ দাবির অভিযোগ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) প্রভাষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা প্রার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ না নিতে হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়া চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা করে ঘুষ দিতে অঙ্গীকারনামায় সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস এ কাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে দাবি প্রার্থীদের।

জানা গেছে, প্রভাষক পদে প্রার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়ার কারণে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়নি। ছাত্রলীগের কর্মীদের কারণে সৃষ্ট জটিলতা শেষ হলে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে সৃষ্টি হয় তোলপাড়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লিখিত পরীক্ষার আগমুহূর্তে ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন কর্মী পঞ্চম তলার চ্যান্সেলরের সম্মেলন কক্ষে এসে প্রভাষক পদপ্রার্থী ১৭ জনকে বের করে দেয় হল থেকে। এ বিতর্কিত কাজে নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস। তিনি যবিপ্রবি’র ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্সের ছাত্র রিয়াদ হত্যা মামলার আসামী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সুব্রতর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রভাষক পদপ্রার্থীদের বের করে দেয় হল থেকে। এরপর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা প্রার্থীদের সঙ্গে তারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে কথা বলে। এসময় পরীক্ষা নিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট মো. আবদুল হামিদের দু’জন প্রতিনিধিও ছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে, প্রার্থীদের হল থেকে বের করে পরীক্ষা না দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়। একপর্যায়ে প্রতি প্রার্থীকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে চাকরি নিতে হবে বলে জোরপূর্বক অঙ্গীকার করিয়ে নেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রার্থী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগের কর্মীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ না দিলে চাকরি হবে না বলে হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস। বাংলা ট্রিবিউনের কাছে তার ভাষ্য, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের বের করে দেওয়া বা ঘুষ দাবির কোনও ঘটনা ঘটেনি। সেখানে ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা গিয়েছিল। সবার দাবি, শিক্ষক নিতে হলে আমাদের বিভাগ থেকেই নিতে হবে। ঘটনার সময় শুরুতে আমি ছিলাম না। ঝামেলা তৈরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই।’ ঘুষ দাবি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি; এ ধরনের কাজ আমাকে দিয়ে সম্ভব নয়।’

প্রার্থী কিংবা অন্য কেউ এসব বিষয়ে কোনও অভিযোগ তোলেনি দাবি করে যবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কার নেতৃত্বে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তবে এটা ঠিক যে, সকাল ১০টার পরীক্ষা যথাসময়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টাখানেক পর ক্যান্ডিডেটরা উপস্থিত হন পরীক্ষা হলে। এ কারণে দেরি করেই তাদের লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা নিতে হয়েছে।’

/জেএইচ/