মুক্তিযোদ্ধা তালিকা: সোনাতলায় পাঁচবারের কমান্ডারসহ ১০২ জন বাদ

বগুড়াবগুড়ার সোনাতলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। পাঁচবারের কমান্ডার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০২ জন বাদ পড়েছেন। এদের অধিকাংশই তালিকা থেকে বাদ পড়াকে দেখছেন ষড়যন্ত্র হিসেবে। শিগগিরই তারা আপিল করা বা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সূত্র জানায়, সোনাতলা উপজেলায় গেজেট ও এফএফ তালিকাসহ ৫২০ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত ছিলেন। মোট ৪৬৩ জন ভাতাভোগী। অনলাইনে আবেদনকারী ৪৩১ জনের মধ্যে ২৪ জনকে তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি যাচাই-বাছাই শেষে শুক্রবার বিকালে উপজেলা পরিষদে তালিকা টানানো হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সাক্ষী না থাকায় লাল মুক্তিবার্তা, গেজেটেড, সাময়িক সনদধারীসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১০২ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।

বাদ পড়াদের অন্যতম হলেন- পাঁচ বারের কমান্ডার আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান আলী সাজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউল করিম শ্যাম্পো, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বুলু, জেলা কমান্ডের সাংস্কৃতিক বিষয়ক কমান্ডার আবদুল হামিদ মণ্ডল প্রমুখ।

বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী সাজু জানান, তিনি মুজিব বাহিনীর সদস্য। ভারতের উত্তর প্রদেশে দেরাদুনে ও টেন্ডুয়া আর্মি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছেন। ক্যাম্প ইনচার্জ বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর প্রত্যয়নপত্র, সাময়িক সনদ, তিনজন সাক্ষী, প্রধানমন্ত্রীর সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও তাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি এর জন্য যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য উপজেলা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম ও কমিটির অপর সদস্য মতিয়ার রহমানকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পুরনো বিরোধের জের ধরে এরা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। তিনি শিগগিরই এই ঘটনার বিরুদ্ধে আপীল করবেন এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম বুলু বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেবো।’

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জিয়াউল করিম শ্যাম্পো অভিযোগ করেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নেইনি বলে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’

সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সাক্ষী না থাকাসহ নানা কারণে ১০২ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তবে এরা ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। তিনি বাদ পড়া মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ দৃঢতার সঙ্গে অস্বীকার করে বলেছেন, ‘এখানে কোনও ষড়যন্ত্র হয়নি।’

/এফএস/

আরও পড়ুন-

যুদ্ধাপরাধে সাজাপ্রাপ্ত গোলাম আযমকে ভাষা সৈনিক স্বীকৃতির দাবি! 

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা করার দাবি ওবায়দুল কাদেরের