দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল, ঘাট পরিস্থিতি স্বাভাবিক

RAJBARI LONCH PIC 24 JUN
প্রিয়জনের সঙ্গে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেষ মুহূর্তে ইট পাথরের কর্মময় শহর ছেড়ে নাড়ির টানে গ্রামে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে লঞ্চ ও ফেরিতে পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে নামছে সাধারণ যাত্রীবাহী বাস ও লোকাল যাত্রীরা। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বিভিন্ন পরিবহনে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো কয়েক লাখ নারী পুরুষ।
শনিবার ২৪ জুন সকাল থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। দুপুরের পর থেকে মানুষের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। তবে দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে কোন যানজট নেই। ফাঁকা বাস ঢাকায় যাচ্ছে ফিরছে যাত্রী নিয়ে।
ঘাটে নেমেই ফাঁকা রাস্তায় দ্রুত গন্তব্যের দিকে ছুটছে যানবাহন। তবে ঈদের পরে ঢাকায় ফেরার সময় দৌলতদিয়া ঘাটে কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে বলে ধারণা করছেন যাত্রীরা। অনূকুল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত লঞ্চ ফেরী চললে কোন ধরনের সমস্যা হবে না বলে দাবি ঘাট কর্তৃপক্ষের।
ঢাকা আসা থেকে কুষ্টিয়াগামী লালন পরিবহনের যাত্রী মিজানুর রহমান জানান, সকালে ঢাকার গাবতলী টার্মিনাল থেকে কুষ্টিয়ার উদেশ্যে রওনা হন। ঢাকার নবীনগর ও মানিগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে যানজটে পরে বেশ কষ্ট হয়েছে।তবে নদী পারাপারে কোনও সমস্যা হয়নি।
ঢাকা থেকে খুলনাগামী হানিফ পরিবহনের যাত্রী রোকসানা পারভীন জানান, ঢাকা থেকে শত শত বাস ছেড়ে আসায় ওপারে (পাটুরিয়া ঘাটে) দীর্ঘ লাইনে বসে থেকে ভোগান্তির স্বীকার হলেও দৌলতদিয়া ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তবে তীব্র গরমে নারী ও শিশুদের বেশি কষ্ট হচ্ছে।
বিআইডব্ল্উিটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন,দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীবাহি বাস ও লোকাল ঈদযাত্রী পারাপারে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৯টি ফেরী।বর্তমানে এরুটে ১৮টি ফেরি চলছে। এ বহরে আরও একটি ফেরী সংযুক্ত হবে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকলে ও ফেরিতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা না দিলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

আলামিন শিপিং লাইন্স এর ম্যানেজার এম এ সেলিম জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও কাজীরহাট-আরিচা নৌরুটে ঈদের আগে ও পরে সাধারণ যাত্রী পারাপারে প্রস্তুত রয়েছে ৩৩টি লঞ্চ। এর মধ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে চলছে প্রায় ২৮টি লঞ্চ। লঞ্চ পারপারে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কোন প্রকারের অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। এতদিন যেমন ২৫টাকা ভাড়া ছিলো ঈদের সময়েও তাই থাকছে।

ঘাট এলাকায় টার্মিনালের পাশে ঘরমুখো হাজার হাজার যাত্রীর জানমালের নিরাপত্তায় উঁচু থেকে লক্ষ্য রাখতে বিশাল আকৃতির একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করেছে আহলাদীপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ। আহলাদীপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিএম ইমদাদুল হক জানান, ঈদের আগে ও পরের সপ্তাহ খানেক সময় দিনে রাতে এই ওয়াচ টাওয়ার থেকে ঘাট এরাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা। অত্যাধুনিক মান সম্পন্ন চশমা ব্যবহার করে ঘাটে গাড়ির চাপ ও যাত্রী সাধারনের জান মাল রক্ষায় ছিনতাই,মলমপার্টি,পকেটমারদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজবাড়ী ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. জিয়া জানান, ঈদের আগে দৌলতদিয়া ঘাটপ্রান্তে যানযটের কোনও সম্ভাবনা নেই। লোকাল পরিবহন এবং এক্সপ্রেস পরিবহনের জন্য আলাদা লেন থাকার কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে বাস চলাচলে কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। যাত্রীরা নিবিঘেœ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে দৌলতদিয়া ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তায় ঘাটে ছিনতাই, মলমপার্টি, পকেটমার ও হিজরাদের দৌরাত্ম কমাতে ঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশি নজরদারি রয়েছে।

/এমএইচ