রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় আবারও নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনে সেখানে ৬ নম্বর ঘাটের পাশে নদীর পাড়ের ২০ মিটার অংশ ধসে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি অনেক জায়গাজুড়ে ছোট-বড় ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় ভাঙন হুমকিতে পড়েছে ওই ফেরিঘাটসহ পাশের বাহিরচর দৌলতদিয়া গ্রাম। গ্রামবাসী ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে।
খবর পেয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র ও বিআইডাব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সী, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মণ্ডল। এ সময় তারা লোকজনকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় অভিযোগ করে কয়েকজন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে অল্প কয়েক বস্তা জিও ব্যাগ ফেলে টাকা খেয়ে ফেলবে, কিন্তু সেগুলো কোনও কাজেই আসবে না। বরাবরের মতোই আমরা আবার কিছু পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে গৃহহীন হবো।’
ছাত্তার মেম্বারপাড়ার আরেক বাসিন্দা লিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর শুধু আশ্বাসই পাই। তবে নদীশাসনের কোনও বাস্তবতা দেখি না। এদিকে প্রতিবছর নদীভাঙনের কারণে ফেরিঘাটের আকার ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন এই ঘাট দিয়ে কয়েক হাজার যানবাহন ফেরি পারাপার হয়। এদিকে দৌলতদিয়া ঘাট ভাঙনপ্রবণ এলাকা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সেখানে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। এবার ভাঙনের মৌসুম শুরুর আগেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা বন্দরের উপপ্রকৌশলী রিশাদ আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্রোতের কারণে নদীভাঙন শুরু হয়নি। নদীর পানি কমে যাওয়ায় কিছু বালুভর্তি জিও ব্যাগ সরে গেছে। যে কারণে নদীপাড়ের দুয়েকটি স্থানে চাপ পড়ে গেছে। যত দ্রুত সম্ভব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বালুভর্তি কিছু জিও ব্যাগ নদীতে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।’
পরিদর্শন শেষে গোয়ালন্দের ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘নদীর পানি কমে যাওয়ার কারণে দৌলতদিয়া ঘাটের কয়েকটি জায়গায় ভাঙনপ্রবণতা দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।’