কালীগঞ্জে উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণে বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহারের এ ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অনিয়ম দেখে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদারের লোকজনকে ডেকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাদেকুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে কনফারেন্স কক্ষের বারান্দা নির্মাণের আগে জায়গাটি বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ ওঠে।’ এরপর সোমবার সকালে তিনি সরেজমিন কাজের অনিয়ম দেখে উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুজিত কুমার ও ঠিকদারের লোকজনকে দপ্তরে ডেকে এনে মাটি না সরানো পর্যন্ত কাজটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কাজের নকশা অনুয়ায়ী বালুর পরিবর্তে কেন মাটি দেওয়া হচ্ছে তার জবাবসহ অন্যান্য ব্যবহৃত সামগ্রী বুঝে নিতে ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে দায়িত্ব দেন তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী ইঞ্জিনিয়ার সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, যশোরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণের কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘পরিষদের কনফারেন্স কক্ষ ভবনের কাজে মেঝেতে সাড়ে তিন ফুট বালু দিয়ে তার ওপর ঢালাই দেওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন বালুর পরিবর্তে মাটি দিয়ে মেঝে ভরাট করছিল। তাদের নিষেধ করা হলেও তারা তা শুনেনি। পরে খবর পেয়ে ইউএনও ঠিকাদারকে মাটি তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।’
সোমবার নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে মেঝেতে মাটি ফেলা দেখা যায়। তবে সেখানে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে পাওয়া যায়নি। ঠিকাদারের নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, মাটি কেন ফেলা হচ্ছে তা তারা জানেন না। কীভাবে কাজ করতে হবে তা ঠিকাদারই জানেন। এক শ্রমিক বলেন, ‘মেঝেতে মাটি ফেলা মনে হয় ভুলই হয়ে গেছে।’
ঠিকাদারের মোবাইলে ফোন নাম্বার কেউ দিতে পারেননি। কাজের সার্বিক দায়িত্বে মধু নামের এক ঠিকাদার রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই।
গত বছরের এপ্রিলে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন একটি অফিস কাম ল্যাবরেটরি ভবন নির্মাণে লুপ ঢালাইয়ে রড না দিয়ে কাটা বাঁশ (কাবারি বা চটা) এবং খোয়ার পরিবর্তে পরিত্যক্ত সুরকিসহ নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
একই বছরের নভেম্বরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের লিফটের পাশের কাঠামো নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়েও রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের প্রমাণ মেলে।
/এএম/আপ-এমপি/