সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর, কাজলা, কর্ণিবাড়ি, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা এবং ধুনটের গোসাইবাড়ী ও ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়া এসব এলাকার অধিকাংশ এলাকাই পানিতে ডুবে গিয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে বন্যার পানি। শিক্ষার্থীরা আসতে পারছে না। বিদ্যালয়ের কাগজপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু স্কুল খোলা থাকলেও বন্যার কারণে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আসতে পারছেন না।
কামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়েছেন। ওপরতলায় ক্লাস হচ্ছে। বন্যার পানিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে।
ধুনটের গোসাইবাড়ী কে ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লতিফা বেগম ও গোসাইবাড়ী এ এ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান বাবলু বলেন, বোহাইলের চর, আওলাকান্দির চর, বৈশাখীর চরের শিক্ষার্থীরা অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা দিতে আসতে পারছেনা।
গোসাইবাড়ী কে ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি জিয়া শাহীন জানান, বন্যায় গরীব শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্ত ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কথা কেউ মাথায় রাখে না। ধুনটের ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জীবন্নাহার বলেন, ‘স্কুলের চারপাশেই তো পানি। ক্লাসরুমেও পানি। শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীরা আসছে না।’
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী সাংবাদিকদের জানান, সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার ৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। বন্যার কারণে ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীরা আসছে না।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র বলেন, ‘সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার আটটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও দু’টি মাদ্রাসায় বন্যার পানি উঠেছে। ধুনটের বৈশাখী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ আরেকটি স্কুলের পরীক্ষা বন্যার আগেই নেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোতে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত বন্যার কারণে পরীক্ষা নেওয়া না গেলে পরে এই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বন্যায় গরীব শিক্ষার্থীরাও বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তাদের জন্য আলাদা অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে যেন তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ না হয়।’
আরও পড়ুন-
শুভ্রা মুখার্জী মেমোরিয়াল হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধে হতাশ এলাকাবাসী
‘সুন্দরবন ধ্বংস করতে ইউনেস্কো থেকে এনওসি আনতে লবিং করছে সরকার’
/টিআর/