জীবন বসু চাকমা আরও বলেন, ‘আমার বাসা দুই পাহাড়ের ঢালে ছিল। বাসার ওপরে কল্পরঞ্জন চাকমা দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে থাকতেন। ঘটনার দিন কল্পরঞ্জন বাসায় ছিলেন না। কল্পরঞ্জনের স্ত্রী কন্তি চাকমা,তার মেয়ে সান্তনা চাকমা ও লতিফা চাকমা মাটি চাপা পড়ে। লতিফা চাকমা বাঁচার জন্য চিৎকার করেন। তার চিৎকার শুনে আমরা সবাই বের হয়ে দেখি, তার বুক পর্যন্ত মাটিতে চাপা পড়া অবস্থায়। আমরা কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে যাওয়ার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘ আশ্রয় কেন্দ্রে আমাদের কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা সাধারণত একটু ভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করি। বাঙালিরা যেভাবে রান্না করা খাবার খায়, সে ধরনের খাবার খেতে আমাদের কষ্ট হয়। জেলা প্রশাসককে ও এখানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরও বলেছি, কিন্তু সমাধান হয়নি।’
রাঙামাটির জেলা প্রশসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি তারা যে ধরনের খাবার খায় তার ব্যবস্থা করা হয়। তারা যদি সেই খাবার প্রতিদিন খেতে চায় তাহলে ব্যবস্থা করা হবে। আমি বিষয়টি বলে দেবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য একটি টেকসই পুনর্বাসন প্রয়োজন। তাড়াহুড়ো না করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনও পাহাড় ধসের ঘটনায় কোনও লাশ আমাদের দেখতে না হয়।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন প্রবল বর্ষণের কারণে রাঙামাটিতে ঘটে যায় স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধস। এতে ১২০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ পরিবার। সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ১ হাজার ২৩১টি বাড়ি, আংশিক বিধ্বস্ত বাড়ির সংখ্যা ৯ হাজার ৫০০। বাকিগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ধসের শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা বেশির ভাগই এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।তাদের খাবারের জোগান দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
/এনআই/ এপিএইচ/