বন্যায় জামালপুরে যত ক্ষয়ক্ষতি

Jamalpurজামালপুরে এবারের বন্যায় সাত উপজেলার সবগুলোই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলা। এই ৭ উপজেলার মোট ৪৮টি ইউনিয়ন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় জেলার মোট ৪৪৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই লাখ ২৮ হাজার ৮৮০ জন মানুষ বন্যাকবলিত হন। সব মিলিয়ে বন্যায় জেলায় মোট ৪৫ হাজার ৫৫টি পরিবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ সময় পানিতে ডুবে ১০ জন, বিদ্যুৎ স্পর্শে দুইজন, বজ্রপাতে দুইজন এবং সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু হয়। বন্যায় মোট ৩২৬টি ঘরবাড়ি, ২৭৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ৪৫ কিলোমিটার পাকা রাস্তা আংশিক ক্ষতি হয়।

৮ কিলোমিটার বাঁধের অংশিক ক্ষতি হয়। ৭ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৪১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় দুই সপ্তাহেরও বেশী সময় এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকে। বন্যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রোগবালাই প্রতিহত করার জন্য মোট ৭৫টি মেডিকেল টিম র্দুগত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে।

ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা একেএম শহীদুল ইসলাম জানান, বন্যা পরবর্তী কোনও রোগবালাই এবার নেই বললেই চলে। তবে দুই একজন ডায়রিয়ার রোগী পাওয়া গেছে।

বন্যায় পানিতে পুকুর ভেসে গেলেও পুকুরের চারপাশে জাল দিয়ে ঘের তৈরি করে মাছ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। মানুষের র্দুভোগ বেড়ে গেলেও বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মানুষ নিজ ঘরে ফিরে নতুন করে সবকিছু শুরু করেছে। তবে বন্যায় সরকারিভাবে যেসব ত্রাণ দেওয়া হয় তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম বলে জানান বন্যা আক্রান্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।

ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বন্যায় ত্রাণসামগ্রী বেছে বেছে তার নিজের লোকজনদের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে চেয়ারম্যান আব্দুল ছালাম এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বন্যা পরবর্তী সময়ে বাজার পরিস্থিতি কিছুটা অস্বাভাবিক ছিল। বর্তমানে চালের দাম কেজি প্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষকে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। বন্যা পরবর্তী সময়ে গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারিভাবে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

/এমপি/