ফতেহপুর মুরারি চাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লাকি আক্তার জানান, নদী পার হয়ে জেলা সদরে যেতে হলে এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগে। সেতুর কাজ শেষ হলে শহরে যেতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। জরুরিভাবে অসমাপ্ত সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অফিস সূত্রে জানা যায়, আবুয়া নদীর ওপর ২০০৮ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৫ দশমিক ৯২৬ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্তের সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরুতে সেতুর দুই পাশের শেষ প্রান্তে অবকাঠামো তৈরি করা হলেও তা অসমাপ্ত রেখে কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার। ঠিকাদারের অভিযোগ, নদীর মধ্যভাগে গভীরতা বেশি হওয়ায় সেতু নির্মাণে জটিলতা দেখা দেয়।
জানা গেছে, এ সড়ক দিয়ে জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর,ধর্মপাশা উপজেলা ও মধ্যনগর থানার কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ভাড়ায় চালিত শতশত মোটরসাইকেল পাড় হয়। বর্ষাকালে নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় নদীতে প্রবল স্রোতের জন্য খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পারাপার আরও বিপদজনক হয়ে ওঠে। ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দিয়ে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার লোকজন ৪০ মিনিটে জেলা সদরে যাতায়াত করতে পারেন।
তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিন মিয়া বলেন, ‘সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করা গেলে জেলা সদরের সঙ্গে তিনটি উপজেলার মানুষ সুফল ভোগ করবেন।’
ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ আবুয়ানদীর ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে জেলার তিনটি উপজেলা ও একটি থানার কয়েক লাখ মানুষ জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুফল পাবেন। তাই আমি দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাজমুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ আবারও শুরু করা হবে।’
সেতুর নির্মাণ কাজ দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারিগরি সমস্যার জন্য সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল কারিগরি ত্রুটি নিরসন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ডিপিপি অনুমোদিত হলে কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’
/এসএনএইচ/