এলকাবাসী জানায়, বাবা-মা মেধাবী ছাত্রী শাপলার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালান। এ অবস্থায় বুধবার সকালে সে নিজেই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যায়। সেখানে গিয়ে নির্বাহী অফিসারকে বলে— ‘স্যার, আমি কালীগঞ্জ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমার মা বাবাসহ পরিবারের লোকজন জোর করে আমাকে বিয়ের দিচ্ছে। আমি বিয়ে করতে চাই না, আমি পড়াশোনা করতে চাই। আমার বাল্য বিয়ে আপনি ঠেকান।’
পরে কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। শিশুটির বাবা-মাকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধের ব্যবস্থা করেন। শাপলা খাতুন কালীগঞ্জ পৌরসভার পশু হাসপাতাল পাড়ার আমিরুল ইসলামের মেয়ে।
এদিকে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাল্য বিয়ের আয়োজন করায় মেয়ের পিতা জাকারুল ইসলামকে এক হাজার টাকা জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাদেকুর রহমান এ জরিমানা করেন।
মোবাইল কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের জাকারুল ইসলামের মেয়ে ও স্থানীয় সুন্দরপুর-দুর্গাপুর আলীম মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রীকে একই উপজেলার দুধরাজপুর গ্রামের আতর আলীর ছেলে মাছুমের (২২) সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
এ খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ওই ছাত্রীর পিতাকে এক হাজার জরিমানা করা হয়। বয়স ১৮ বছর না হওয়ায় বিয়ে দেওয়া যাবে না মর্মে মেয়ের অভিভাবককের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।
মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ছাদেকুর রহমান বলেন, ‘বাল্য বিয়ের গোপন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে ছাত্রীর পিতা জাকারুল ইসলামকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় উপস্থিত ছিলেন, দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইলিয়াস রহমান মিঠু, সুন্দরপুর, সোনার বাংলা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শিবুপদ বিশ্বাস, ইউপি সদস্য ফয়জুল্লাহ মাহমুদ ও তৌহিদুর রহমান।