চালের রফতানি মূল্য বাড়িয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

চালভারত থেকে দেশে চাল আমদানিতে দুদিনের ব্যবধানে চালের রফতানি মূল্য ৬০ থেকে ৭০ ডলার করে বাড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। দুদিন আগেও ভারত থেকে দেশে চালের আমদানি মূল্য প্রকারভেদে ৪৮০ থেকে ৫শ ডলার ছিল। এখন সেখানে প্রতি টন চালের মূল্য নেওয়া হচ্ছে ৫৬০ থেকে ৫৭০ ডলার করে। এতে করে দেশে চালের বাজার পুরোপুরি অস্থিতীশীল হয়ে উঠেছে। দুদিনের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে বেড়ে গেছে ৪ থেকে ৫ টাকা। চালের দাম আরো বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিন হিলি স্থলবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে বন্দর দিয়ে স্বর্ন ও রত্না জাতের চাল আমদানি হচ্ছে। আর আমদানিকৃত এসব চাল প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে পাইকারীতে (ট্রাকসেল) ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে। দুদিন আগেও এসব চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। আর ঈদের আগে এসব চাল প্রকারভেদে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

হিলি স্থলবন্দরে চাল কিনতে আসা ক্রেতারা জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হওয়ার কারণে সেসব অঞ্চলে চালের সংকট দেখা দেওয়ায় আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে চাল কিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকি। কিন্তু এখানে চাল কিনতে এসে দেখি যে চালের বাজারে যেন এক প্রকার আগুন লেগে গেছে।  ঈদের আগে যে চাল আমরা হিলি স্থলবন্দর থেকে প্রকারভেদে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। এখন সেই চালের দাম প্রতিদিন বাড়তে বাড়তে প্রকারভেদে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। দুদিন আগেও এসব চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে কিনেছিলাম। যে যেভাবে পারছে তাদের মতো করে চালের দাম নিচ্ছে এবং চাল বিক্রি করছে। কারও কোন কিছু যেন বলার নেই।  

হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক হারুন উর রশীদ, মামুনুর রশীদ ও রাজীব দত্ত বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মাত্র দুদিনের ব্যবধানে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা টন প্রতি চালের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে ৭০ থেকে ৮০ ডলার করে। দুদিন আগেও ভারত থেকে প্রতি টন চাল আমরা আমদানি করেছি প্রকারভেদে ৪৮০ থেকে ৫শ ডলার মূল্যে। ঈদের আগে এসব চাল ৪৬০ থেকে ৪৭০ ডলার মূল্যে আমদানি হতো। দেশের বাজারে চালের ব্যাপক চাহিদাকে পুঁজি করে চালের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এখন সেই চালের দাম তারা ৫৬০ থেকে ৫৭০ ডলার করে দাম নিচ্ছেন। এর ফলে দুদিনের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা করে বেড়েছে। বর্তমানে আমদানিকৃত স্বর্না ও রত্না জাতের চাল প্রকারভেদে পাইকারীতে (ট্রাকসেল) বিক্রি করা হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি দরে। দুদিন আগে এসব চাল ৪১ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। আর ঈদের আগে এসব চাল প্রকারভেদে ৩৮ টাকা থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল। মূলত ভারতীয় ব্যবসায়ীদের চালের রফতানিমূল্য বৃদ্ধি করার কারণেই দেশের বাজারে চালের দাম কমছেনা। আমরা আমদানিকারকরা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। তারা আমাদের নিকট যেমন দাম ধরছে আমরা আমদানি করে তেমন দামেই বিক্রি করছি। আর আমাদের দেশের যে প্রেক্ষাপট তাতে করে আমাদের বাধ্য হয়ে তাদের কাছ থেকে ওই দামেই চাল আমদানি করতে হচ্ছে। 

হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আমদানি পর্যায়ে চালের শুল্ক ১০ থেকে ২ ভাগ করার ফলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানির পরিমাণ বেড়ে গেছে। ঈদের পর ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গত ৫ দিনে বন্দর দিয়ে ১৫ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। আর গত আগস্ট মাসে বন্দর দিয়ে ৬৯ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছিল।