শান্তি মিশনে বোমা বিস্ফোরণে নিহত সৈনিক মনোয়ারের বাড়িতে মাতম

কাঁদছেন মনোয়ারের মা রওশন আরা (ছবি- প্রতিনিধি)

মালিতে বিদ্রোহীদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী মনোয়ার হোসেনের বাড়িতে চলছে মাতম। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের আহাজারিতে মনোয়ারের বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক এলাকার বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিহত মনোয়ারের বাড়িতে গিয়ে স্বজন হারানোর আহাজারি দেখা যায়। কাঁদতে কাঁদতে কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন মনোয়ারের মা রওশন আরা। বাকরুদ্ধ তার স্ত্রী ইভা আক্তার। অঝোর ধারায় কাঁদতে দেখা যায় মনোয়ারের ৭ বছর বয়সী কন্যা নুশরাতকে। কিছু না বুঝলেও অন্যদের আহাজারি দেখে কাঁদছে মনোয়ারের দেড় বছর বয়সী কন্যা তাসমিনও। আত্মীয়স্বজনদের সান্ত্বনাও তাদের কাউকে শান্ত করতে পারছে না।

মনোয়ারের মূল বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন গ্রামে। পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক এলাকার বাড়িতে থাকতেন। ওই বাড়িতে জড়ো হওয়া আত্মীয়-স্বজনরা জানালেন, তিন ভাই-বোনের মধ্যে মনোয়ার ছিলেন সবার বড়। ছোট ভাই রবিউল ইসলাম পুলিশে চাকরি করেন। এক বোন স্বামীর সঙ্গে থাকেন ঢাকায়।

স্বজনরা আরও জানান, চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে মিশনের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন মনোয়ার। এরও দিন কয়েক আগে বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নেন তিনি। তার মা রওশন আরা চাননি, মনোয়ার মিশনে যান। তবু দুই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তিনি মিশনে যান।

কাঁদছেন মনোয়ারের স্ত্রী ইভা আক্তার (ছবি- প্রতিনিধি)

১০ বছর আগে সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন গ্রামের ইভা আক্তারকে বিয়ে করেন মনোয়ার। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইভা জানান, শনিবার বিকাল ৪টার দিকে তার সঙ্গে মনোয়ারের মোবাইল ফোনে কথা হয়। ওই সময় মনোয়ার জানান, তিনি ভালো আছেন। বড়মেয়ে নুশরাতকে ডেকে ভালোভাবে লেখাপড়া করার পরামর্শও দেন তিনি।

স্বজনরা জানান, মনোয়ারের মৃত্যুর খবর তারা ইন্টারনেটে পেয়েছেন। এর পরই তারা শোক-সন্তপ্ত পরিবারটির পাশে ছুটে এসেছেন।

রবিবার মালির বিদ্রোহীদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। এই তিনজনের একজন সৈনিক মনোয়ার হোসেন। এ ঘটনায় নিহত বাকি দুই জন হলেন- সার্জেন্ট আলতাফ (ইএমই দিনাজপুর) ও ল্যান্স কর্পোরাল জাকিরুল (আর্টিলারি নেত্রকোনা)।