পাসপোর্ট করার সময় বগুড়ায় একই পরিবারের তিন রোহিঙ্গা আটক

আটককৃত রোহিঙ্গারা (ছবি- প্রতিনিধি)

দালালের মাধ্যমে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট তৈরি করানোর চেষ্টার সময় বগুড়ায় একই পরিবারের তিন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে হাজেরা নামে একজনকে এবং বৃহস্পতিবার দুপচাঁচিয়া থেকে ওসমান গণি ও আমেনা খাতুন ওরফে রমিজা নামে অন্য দুই জনকে আটক করা হয়।

বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শাহজাহান কবির ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

আটককৃত রোহিঙ্গারা হলেন, ইন্দোনেশিয়া প্রবাসী আবু সালেহের স্ত্রী হাজেরা বিবি (২২), তার ছেলে ওসমান গণি (৫) ও হাজেরার মা আমেনা খাতুন ওরফে রমিজা (৪৫)। এই তিন রোহিঙ্গা চট্টগ্রামের ট্রেনখালী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে থাকতেন।

বগুড়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক শাহজাহান কবির জানান, হাজেরা বিবি ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তারা অফিসে ফরম জমা দিতে আসেন। এসময় হাজেরা বিবির কাছে তার নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন আচরণ শুরু করেন। এতে সন্দেহ হওয়ায় ফরমসহ হাজেরাকে আটক করে সদর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

থানায় হাজেরার নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে ইশারায় বুঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি বাকপ্রতিবন্ধী। পরে কাগজে বাংলায় তার নাম হাজেরা লেখেন। আমেনা খাতুন জানান, পাসপোর্টের আবেদনে তার নাম আমেনা লেখা থাকলেও তার আসল নাম রমিজা এবং তার স্বামীর নাম আব্দুস সাত্তার লেখা থাকলেও তার স্বামীর নাম মূলত আব্দুল গফুর। তিনি আরও জানান, জামাই আবু সালেহ ইন্দোনেশিয়ায় এবং তার ভাই মালয়েশিয়া থাকেন। সেখানে যাবার জন্য তারা পাসপোর্ট করতে এসেছিলেন।

ওসি এমদাদ হোসেন ও সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সারওয়ার জানান, হাজেরা, তার মা আমেনা ও তার ছেলে ওসমান চট্টগ্রামে শরণার্থী শিবিরে থাকতেন। হাজেরার স্বামী আবু সালেহ ইন্দোনেশিয়া এবং এক মামা মালয়েশিয়া প্রবাসী। হাজেরা, আমেনা ও ওসমান বিদেশে যাওয়ার জন্য বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার আবদুল মান্নান নামে এক দালালের সহযোগিতায় পাসপোর্ট করতে আসেন। পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক হাজেরাকে আটক করে পুলিশে দেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে দুপচাঁচিয়ার তারাপুর গ্রাম থেকে আমেনা ও ওসমানকে আটক করা হয়। এরা দালালের মাধ্যমে দুপচাঁচিয়া সদর ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে জন্মনিবন্ধন সনদও সংগ্রহ করেন।

ওসি এমদাদ হোসেন বলেন, ‘তিন রোহিঙ্গার জন্মসনদে ঠিকানা দুপচাঁচিয়া উপজেলা লেখা রয়েছে। পাসপোর্ট করতে সহায়তাকারী দালালকে আটকের চেষ্টা চলছে। তিন রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রামের ক্যাম্পে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’