প্রধানমন্ত্রী নিজে ডিএনডি প্রকল্পের নির্দেশ দিয়েছেন: শামীম ওসমান

 

নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন শামীম ওসমানঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকার (ডিএনডি) জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের কষ্টের সীমা নেই বলে  মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে উদ্যোগী হয়ে ডিএনডি এলাকার  বিশ লাখ মানুষের সমস্যা লাঘবে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর গত বছরের ৮ আগস্ট একনেক সভায় ৫৫৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন তিনি।’ রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের তৃতীয় তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।

শামীম ওসমান বলেন, ‘ডিএনডি এলাকার পানি-পর্যন্ত বিষাক্ত। মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ আমাকে পীড়া দেয়। এ কারণে আমি এবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদে প্রথম দিনের বক্তৃতায়ই পানিসম্পদমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ডিএনডি এলাকার জলাবদ্ধতার কথা তুলে ধরি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। পরবর্তী সময়ে আবার সংসেদে দাঁড়িয়ে বলি, যদি ডিএনডি এলাকার সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে আমি পদত্যাগ করব। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমরা গাড়িতে চড়ি, সংসদে কথা বলি, বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে চলাফেরা করি। কিন্তু জনগণকে কষ্টে রেখে এসব সুবিধা ভোগ করার কোনও মানে হয় না।’

প্রকল্প হাতে নেওয়ার ব্যাপারে  সরকার দলীয় এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘পরিকল্পনামন্ত্রীকে ডিএনডি প্রকল্প এলাকায় নিয়ে এসেছি। তিনি নিজে সমস্যা সমাধানের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দিয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে ডিএনডি এলাকার বিশ লাখ মানুষের সমস্যা লাঘবের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ প্রকল্পের বাইরেও আরও তিন থেকে সাড়ে তিনশ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘স্যুয়ারেজ লাইন, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের জন্য এ অতিরিক্ত অর্থ লাগবে। এসব কাজ সিটি করপোরেশন ও এলজিইডি’র মাধ্যমে করা হবে।’ সম্পূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজধানী পাশে অবস্থিত ডিএনডি অঞ্চলটি গুলশান-বনানীর চেয়েও বেশি দৃষ্টিনন্দন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ডিএনডি এলাকার সীমানা সম্পর্কে শামীম ওসমান বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড নির্মাণ করেছি। এরপর ডিএনডি এলাকার ভেতরে প্রায় দেড় হাজারের বেশি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। ডিএনডি’র প্রায় ৭৫ শতাংশ জায়গা আমার নির্বাচনি এলাকায় পড়েছে। বাকিটা পড়েছে ঢাকা-৫ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা, ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সংরক্ষিত আসনের সানজিদা বেগমের এলাকায়।’ আগামী বর্ষা মৌসুমে যেন কোনও বাড়িতে পানি না ওঠে, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পানিসম্পদমন্ত্রীর কাছে তিনি দাবি জানান।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হীরু, নারায়ণগঞ্জ-৩-এর এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, সংরক্ষিত আসনের নারী সাংসদ সানজিদা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত শহীদ মো. বাদলসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।