টেস্টে ফেল করেও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ

বগুড়ানির্বাচনি পরীক্ষায় (টেস্টে) ফেল করেও অতিরিক্ত ফি দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ আছে, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার প্রায় সব উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিষয় প্রতি অতিরিক্ত ৫শ’ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়রে কাঞ্চনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এবারের এসএসসির নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশ নেন ১৪০ জন। যাদের মধ্যে সব বিষয়ে পাস করেন মাত্র ৩৯ জন। অন্যরা এক থেকে ৬টি বিষয়ে ফেল করেন। অথচ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত টাকা নিয়ে তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে। পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সবমিলিয়ে ৪-৬ হাজার টাকা আদায় করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অভিভাবকরা টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাগ্নে নির্বাচনি পরীক্ষায় চারটি বিষয়ে ফেল করেছে। বোর্ড নির্ধারিত ফি এক হাজার ৬শ’ থেকে এক হাজার ৮শ’ টাকা। অথচ কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার টাকা নিয়ে তাকে (ভাগ্নে) ফরম পূরণের সুযোগ দিয়েছে। অতিরিক্ত আদায় করা টাকাগুলো প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি নেতাদের পকেটে যাচ্ছে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপেন্দ্র নাথ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘নির্বাচনি পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে বোর্ডের কোনও বিধিনিষেধ নেই।’ এ সময় তিনি অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মোতাহার হোসেনও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, ‘ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয় প্রতি টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। তবে বোর্ড ফি, স্কুলের সেশন ফি এবং বকেয়া বেতনসহ আনুষাঙ্গিক খাতে মোট চার হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে।’

এছাড়াও উপজেলার অন্যান্য মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনি পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে কোনও বাধানিষেধ নেই। তবে ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র বলেন, ‘মৌখিকভাবে অতিরিক্ত ফি নিয়ে ফরম পূরণের অভিযোগের কথা শুনেছি। এছাড়া এসএসসির নির্বাচনি পরীক্ষায় ফেল করলেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে কোনও চিঠি বোর্ড থেকে দেওয়া হয়নি। তবে শুনেছি এ বিষয়ে একটি চিঠি স্কুলগুলোতে দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
আমনের দাম বেশি, কৃষকের মুখে হাসি