চলতি বছর রাজশাহীর ২২৫ নারী নির্যাতনের শিকার

মতবিনিময় সভা (ছবি- প্রতিনিধি)

চলতি বছরে রাজশাহী জেলার ১৩টি থানায় ২২৫ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি এদের বড় একটি অংশ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর সাগরপাড়ায় ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টে’র কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় এসিডি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১০ মাসে (জানুয়ারি- অক্টোবর) জেলায় ১১ জন নারীকে হত্যা, ৯ জনকে হত্যারচেষ্টা, ৩ জনের রহস্যজনক মৃত্যু, ১৮ জনকে ধর্ষণ, ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা, ২ জনকে অপহরণ, একজনের ওপর এসিড নিক্ষেপ, ৩৬ জনের আত্মহত্যা, ৭ জনের আত্মহত্যার চেষ্টা ও ১৬ জনকে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। বাকি নারীরা বিভিন্ন ধরনের বিরোধের জেরে অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হন।

এসিডি জানায়, ২০১৬ সালে ২৭৫ জন, ২০১৫ সালে ২০১ জন, ২০১৪ সালে ২৭৬ জন এবং ২০১৩ সালে ১৮১ জন নারী একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।

এসিডি’র মনিটরিং অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার বিলকিস আরা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অনলাইনসহ স্থানীয় ও জাতীয় ২৩টি পত্রিকার প্রকাশিত খবর ও আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাধ্যমে এসব তথ্য সংগ্রহ করি।’

মানবাধিকার কর্মী এহসানুল আমিন বলেন, ‘নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে তাদের অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়াটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু নারীর এগিয়ে চলার লড়াই অব্যাহত রযেছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে।’

অনলাইনে যৌন হয়রানি বন্ধে রোধে কাজ করছেন এসিডি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অনলাইনেও নারীরা হয়রানির শিকার হন। এজন্য আমরা জনসচেতনামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তাই ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধ ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের যথাযথ ব্যবহারের দাবি জানাই।’

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘নারী নির্যাতনের সংখ্যা যেন না বাড়ে, সেজন্য মানবাধিকার সংস্থগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ডে পুলিশও কাজ করছে। সেইসঙ্গে নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য আমাদের নিজস্ব সাপোর্ট সেন্টার রয়েছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধে রাজশাহী মহানগর পুলিশ মনিটরিং করে থাকে।’