পুনর্বাসিত হচ্ছে সাত হাজার ভিক্ষুক

বগুড়া‘ভিক্ষার হাত হোক কর্মের হাতিয়ার’ স্লোগানকে সামনে রেখে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বগুড়াকে। জেলার ১২ উপজেলায় থেকে ৭ হাজার ৩১১ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধশত ভিক্ষুককে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন করেছে জেলা প্রশাসন। 

বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সূত্র জানায়, জেলায় দিন দিন ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে। বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে গরিব ও দুস্থরা ভিক্ষা করে করে জীবিকা নির্বাহ করেন। একই স্থানে একাধিক ভিক্ষুক থাকায় তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব হয় না। এ ভিক্ষাবৃত্তিকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে কাজ শুরু করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা তালিকা প্রণয়ন করেছেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভিক্ষুকমুক্ত করার পাশাপাশি ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করতে তাদের পুনর্বাসনের কাজও শুরু করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ উপজেলায় ৭ হাজার ৩১১ জন ভিক্ষুকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের নিয়েই কাজ শুরু করা হয়েছে। এর বাহিরেও কিছু ছিন্নমূল ও ভ্রাম্যমাণ ভিক্ষুক রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরও তালিকাভুক্ত করা হবে।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘ভিক্ষুকমুক্ত করতে কাজ শুরু হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন, জেলা ইটভাটা মালিক সমিতি, মোটর মালিক গ্রুপ, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নসহ সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতা করছেন। তাদের দানের টাকায় ভিক্ষুকদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, ‘ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুরুষ ভিক্ষুকদের রিকশা ও মনোহারী দোকান করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গরু-ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি ও প্রশিক্ষণসহ সেলাই মেশিন দেওয়া হচ্ছে নারীদের। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আর যারা কাজ করতে অক্ষম তাদের বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় ২৯৩ জন, সারিয়াকান্দিতে ৮৩৭ জন, কাহালুতে ৫৯২ জন, শিবগঞ্জে ৯৮৮ জন, আদমদীঘিতে ৪৫৪ জন, শেরপুরে ৩০০ জন, ধুনটে ৫৪৬ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৪৪২ জন, শাজাহানপুরে ৮৮৫ জন, গাবতলীতে ৬১০ জন, নন্দীগ্রামে ৮৩৭ জন এবং সোনাতলাতে ৫২৭ জন ভিক্ষুককে তালিকার আওতায় আনা হয়েছে।