পুকুরে নেমে মাছ ধরলেন নারী এসপি

পুকুরে নেমে মাছ ধরছেন এসপি

পুকুরে হাঁটুর সমান কাদা পানি। এর মধ্যে নেমে মাছ ধরছেন কয়েকজন। তাদের মাঝে রয়েছেন এক নারীও। এ নারী সাধারণ কেউ নন; চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার পিপিএম।

শুক্রবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সামনের পুকুরে সহকর্মীদের সঙ্গে মাছ ধরেন এসপি শামসুন্নাহার। ওই সময় তোলা কিছু ছবি পরে ফেসবুকে পোস্ট করা হয় এবং মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁদপুর শহরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনেই রয়েছে একটি পুকুর। শুক্রবার সকালে সেচে এ পুকুরের পানি তোলা হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে এ পুকুরের কাদা পানিতে মাছ ধরতে দেখা যায় এসপি শামসুন্নাহারকে। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশের আরও কয়েকজন সদস্যও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, মাছ ধরার পর পুকুরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে তা ড্রামে ভরেন এসপি শামসুন্নাহার। পরে সেই মাছ সহকর্মীদের মাঝে বিতরণ করেও দেন। এর আগে এসপির মাছ ধরার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন অনেকে। সে ছবিগুলো পোস্ট করা হলে তা ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ওয়ালে ওয়ালে।

ড্রামে মাছ রাখছেন এসপি

ফেসবুকে ছবিগুলো শেয়ার করে সানাউল্লাহ নামে এক আইনজীবী লিখেছেন, ‘অন্যরকম এক ছবি, ভালো লাগার মতো...।’

হাবিব খান নামে এক পুলিশ সদস্য লিখেছেন, ‘মাননীয় পুলিশ সুপার পুকুর থেকে নিজ হাতে মাছ ধরে সবার মাঝে বিতরণ করেছেন। অসাধারণ দৃশ্য।’

জি এম শাহীন নামে চাঁদপুরের এক সাংবাদিক ছবিগুলো আপ করে লিখেছেন, ‘আমাদের চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম। একজন মানবিক কর্মকর্তা। তাই তো নিজ কার্যালয়ের সামনের পুকুরে কাদা পানিতে নেমেছেন মাছ ধরতে। মাটির মানুষ তিনি।’

সহকর্মীদের সঙ্গে মাছ ধরছেন এসপি

হাবিবুর রহমান খান নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এই মাছ কোনও জেলে পরিবার ধরেনি; আমাদের চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম পুকুর থেকে ধরছেন। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ।’

চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ডিআই-১ বলেন, ‘এসপি স্যার শুক্রবার আমাদের অফিসের সামনের পুকুরটিতে নেমে মাছ ধরেছেন। ধরা মাছগুলো উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের দিয়েছেন বলে জেনেছি।’

পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবিয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গী গ্রামের ইসমাইল মুন্সীর মেয়ে। ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএসএস, ১৯৯৮ সালে এমএসএস এবং ২০০৫ সালে এমফিল করেন।

২০০১ সালে বিসিএস পাশ করে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। এরপর মানিকগঞ্জ, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ, পুলিশ সদর দফতর, টুরিস্ট পুলিশসহ বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেন।