লাশের অপেক্ষায় পিয়াসের স্বজনেরা

পিয়াসের মা ও বোন (ফাইল ছবি)

নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পিয়াস রায়ের লাশ সনাক্ত হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তার লাশ দেশে পৌঁছাবে। এখন অশ্রুসিক্ত নয়নে সেই লাশের অপেক্ষা করছেন পিয়াসের স্বজনেরা।

স্বজনেরা জানান, পিয়াসের বোন-জামাই হিমাদ্রি সরকারের কাছ থেকে তারা জেনেছেন, পিয়াসসহ তিন বাংলাদেশির লাশ সনাক্ত করা হয়েছে। আর গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর থেকে তারা জেনেছেন, বৃহস্পতিবার লাশ দেশে এসে পৌঁছাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিয়াসের বোন-জামাই হিমাদ্রি সরকার ও তার বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায়সহ আরও কয়েকজন বুধবার রাতের লঞ্চে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালেই তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন।

মোবাইল ফোনে হিমাদ্রি সরকার জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তারা লাশ বুঝে পাবেন বলে আশা করছেন। এরপর রাতের মধ্যেই তারা লাশ নিয়ে বরিশালে পৌঁছাবেন।

তিনি আরও জানান, এর আগে ১৬ মার্চ দুপুরে ইউএস-বাংলা এয়ালাইন্সের এক ফ্লাইটে পিয়াসের লাশ সনাক্ত করতে সুখেন্দু বিকাশ রায় নেপালের কাঠমান্ডুতে যান। তবে পিয়াস এমনভাবে দগ্ধ হন যে, তার চেহারা দেখে লাশ সনাক্ত করা সুখেন্দু বিকাশ রায়ের পক্ষে সম্ভব হয়নি। পরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশ সনাক্ত করা হয়।

বুড়িমারী জিরো পয়েন্টে পিয়াস (ফাইল ছবি)

পিয়াসের গ্রামের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামে। তবে তিনি বরিশাল নগরীর বগুড়া রোডের এম এ গফুর সড়ক সংলগ্ন বাসায় বাবা-মার সঙ্গে থাকতেন। বুধবার দুপুরে পিয়াসের বরিশাল নগরীর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। শোকে অনেকটা যেন পাথর হয়ে গেছেন পিয়াসের মা পূর্ণিমা রায়।

পিয়াসের বোন শুভ্রা রানী বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রথমে মনে হয়েছে, এই বুঝি ভাই ফোন দিয়ে বলবে, আমি ঠিক আছি। সে অপেক্ষা শেষে জানলাম, ভাই আর নেই। ভেবেছিলাম, সোমবার (১৯ মার্চ) ভাইয়ের মরদেহ হয়তো বাকি মরদেহর সঙ্গে দেশে আসবে। কিন্তু তাও আসলো না।’

শুভ্রা রানী আরও বলেন, ‘এখন সবাই শেষবারের মতো ভাইয়ের মরদেহ দেখার অপেক্ষায় আছি। মা কেমন যেন ভেঙে পড়েছেন। কারও সঙ্গেই কথা বলছেন না। এমনকি, কাঁদতেও পারছেন না।’