বাড়ি এসে দম্পতিকে মারধর

৪ দিনেও ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ

বরগুনা

বরগুনার পাথরঘাটায় জাহাঙ্গীর ও মাহামুদা বেগম দম্পতিকে তাদের বাড়িতে এসে পৌর ছাত্রলীগ নেতার মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) বিকাল পর্যন্ত মামলা নেয়নি পুলিশ। জাহাঙ্গীরের অভিযোগ, ইতোমধ্যে তিনি চারবার থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। মামলা না নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার ওসি। তার দাবি, পৌর মেয়র এ ঘটনা আপসে মীমাংসা করবেন জানিয়ে মামলা না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ দাবি অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট মেয়র বলছেন, তিনি বরং ওসিকে মামলা নেওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, একটি মাটির পাত্র ভাঙার অভিযোগে গত সোমবার (১৯ মার্চ) জাহাঙ্গীর ও মাহামুদা বেগম দম্পতিকে তাদের পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাড়িতে এসে গালিগালাজ করেন পৌর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক এম রাকিব খান, তার বড় ভাই মো. হাসান খান ও বাবা ফারুক খান। এ সময় মাটির পাত্র ভাঙেনি বলে জানানোয় জাহাঙ্গীরকে মারধর শুরু করেন ওই তিনজন। একপর্যায়ে তারা জাহাঙ্গীরের পায়ের গোড়ালিতে রামদা দিয়ে কোপও দেন। এ সময় মাহামুদা বেগম স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে এলে তাকেও বেদম মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মারধরে আহত জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মামলা দেওয়ার জন্য খোঁড়াতে খোঁড়াতে আমি ৩-৪ বার থানায় গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এম রাকিব খানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি প্রথমে তা ধরেন। পরে সাংবাদিক পরিচয় জানার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ কেটে দেন। পরে আরও অনেকবার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক লিংকন অধিকারী জানান, মাহামুদা বেগমের শরীরে এখনও মারধরের চিহ্ন আছে। তার অবস্থা গুরুতর। কিছু দিন আগে তার একবার অপারেশন হয়েছিল।

পাথরঘাটা থানার ওসি মোল্লা মো. খবির আহম্মেদ বলেন, ‘অভিযুক্তরা পাথরঘাটা পৌর মেয়রের আত্মীয়। সেজন্য মেয়র স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে ঘটনাটি আপসে মীমাংসা করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে মামলা না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যদি আপসে মীমাংসা না হয়, তবে মামলা গ্রহণ করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, ‘আমি ওসিকে মামলা নেওয়ার জন্য বলেছি। সে কেন মামলা নেয়নি তা বলতে পারব না।’