লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমী স্নানোৎসব শুরু শনিবার

লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমী স্নানোৎসব (ফাইল ছবি)সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমী স্নানোৎসব শুরু হচ্ছে কাল শনিবার (২৪ মার্চ)। এই উৎসবের লগ্ন শুরু হবে শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ডে, শেষ হবে রবিবার (২৫ মার্চ) সকাল ৭টা ৫২ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে। জগতের যাবতীয় সংকীর্ণতা ও পঙ্কিলতার আবরণে ঘেরা জীবনের পাপমুক্তির বাসনায় পালিত এই স্নানোৎসবকে কেন্দ্র করে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদে। এ উপলক্ষে লাঙ্গলবন্দ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও স্নানোৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য শংকর সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এ বছরের স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের স্নানের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে ১৮টি ঘাট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ লাখ পুণ্যার্থী এই উৎসবে অংশ নিতে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্নানোৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য নির্ধারিত ঘাটগুলো হলো— আড্ডা হরিরামপুর ঘাট, নলিত মোহন সাধু ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধি (শশ্মান) ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালি ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, পাষাণকালী মন্দির ঘাট, মনোজকান্তি বড়াল ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, মনি ঋষিপাড়া ঘাট, ব্রহ্ম মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী ঘাট, কালীগঞ্জ পঞ্চপাণ্ডব ঘাট ও সাবদী কালীবাড়ি ঘাট।
স্নানোৎসব নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্যরা যেমন মোতায়েন থাকবেন, তেমনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়াচ টাওয়ার ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মঈনুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্নানোৎসবকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তায় র্যা ব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবেন। সাদা পোশাকে থাকা সদস্যরাও টহল দেবেন। এ ছাড়া, রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক ওই এলাকা মনিটরিং করা হবে। মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশও কাজ করবে।’
জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অন্যান্যবারের মতো এবারও লাঙ্গলবন্দের স্নানোৎসবের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্নানের ঘাটগুলোতে কাপড় বদলানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। পুণ্যার্থীদের চিকিৎসা সেবার জন্য মেডিক্যাল টিমও রাখা হয়েছে। স্নানোৎসব নির্বিঘ্ন করতে ওই এলাকার সড়কে ভিক্ষুক বসতে দেওয়া হবে না।’
উল্লেখ্য, প্রতিবছর স্নানোৎসব পালিত হয়ে এলেও ২০১৫ সালে এই উৎসবটি নির্বিঘ্ন ছিল না। ওই বছরের ২৭ মার্চ স্নানোৎসবে বেইলি সেতু ভেঙে পড়ার গুজবে ভিড়ে পদদলিত হয়ে সাত নারীসহ ১০ জন পুণ্যার্থী নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন আরও ২০ পুণ্যার্থী।