গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর





নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এবং গাছ ভেঙে উল্টে গেছে বাস গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর মহেশপুর (বাঁশহাটি) এলাকায় যাত্রীবাহী বাস উল্টে ১৮ জন নারী-পুরুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এ পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ১৪ মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আকতারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৮ জনের মধ্যে দুপুর একটার দিকে প্রথমে আটজন ও পরে আরও ছয়জনসহ মোট চৌদ্দজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতদের স্বজনরা হাইওয়ে থানায় এসে তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন। এরপর পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত অন্য চার জনের পরিচয়ও জানার চেষ্টা চলছে। পরিচয় শনাক্তের পর তাদের মরদেহও স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে।’
মরদেহ হস্তান্তর করা ১৪ জন হলেন— ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আবদুর রহিম, এনামুল হক ও মকবুল হোসেন, ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার বিশ্বনাথ চন্দ্র রায় ও ইসমাইল হোসেন রুবেল এবং টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শাহজাহান শিকদার। রংপুরের গংগাচড়ার এমদাদ আলী, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের ইউনুস আলী, নীলফামারীর জলঢাকার মিনারুল খাঁন, কুড়িগ্রাম রাজীবপুরের মাসুদ রানা, কুষ্টিয়ার মিরপুরের আবদুর রশিদ, পঞ্চগড়ের বোদার জহিরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল সদরের রুবেল হোসেন ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জের আখতারুল ইসলাম। নিহতদের মধ্যে ইউনুস আলী পেশায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী, মাসুদ রানা আলম এন্টারপ্রাইজের সুপারভাইজার, বিশ্বনাথ চন্দ্র রায় আনছার সদস্য ছিলেন। আর রুবেল হোসেন ওয়ালটনে ও মিনারুল ইসলাম স্কয়ায় কোম্পানিতে চাকরি করতেন। এছাড়া, নিহত অন্যরা শ্রমিক ও গরু ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত ছিলেন। 
পলাশবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. শাহিনুর আলম বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারের সদস্যদের নগদ ১০ হাজার টাকা করে  দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী পরিচয় পাওয়া ১৪ জনের পরিবারের সদস্যর হাতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে সার্বিক খোঁজখবর ও তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সহায়তা করা হবে।’
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘দুর্ঘটনার বিষয়ে এখনও কোনও মামলা হয়নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অবস্থায় উদ্ধার করে হাইওয়ে থানায় আনা হয়েছে।’ উল্লেখ্য,ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আলম এন্টারপ্রাইজের একটি যাত্রীবাহী বাস ৬০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে শনিবার পঞ্চগড়ে যাচ্ছিল।পথে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর মহেশপুর (বাঁশহাটি) এলাকায় পৌঁছলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ধারে একটি রেইনট্রি গাছে ধাক্কা দেয়। এসময় সড়কের গাছটি উপড়ে ফেলে এক পর্যায়ে বাসটি উল্টে খাদে পড়ে যায়। এতে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৩০ জন।

আরও পড়ুন: ঘুম চোখে ও বেপরোয়া গতির বাস চালাচ্ছিলেন চালক