ঢাকা থেকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জে নিয়ে নির্যাতন, আটক ২

ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে রাজধানী ঢাকা থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে কিশোরগঞ্জ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০ লাখ টাকা দাবি করে অপহৃতদের নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। অভিযুক্তরা, ভুক্তভোগীদের মিথ্যা অভিযোগে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকিও দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নির্যাতনের শিকার ওই ব্যবসায়ীদের শহরের শোলাকিয়া এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা মৃত শামসুদ্দিনের ছেলে পলাশ (৪২) ও তার সহযোগী কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়াকান্দা গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে মুখলেছুর রহমানকে (৪৫)।কিশোরগঞ্জ

অপহরণের শিকার মাগুরা সদরের পাকাখোর্দ্দ গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে তৌহিদুর রহমান ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটার পশ্চিম পরুরা গ্রামের রফিক উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে বসুন্ধরা এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদেরকে একটি প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নেওয়া হয়।  পরে সারাদিন ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া এলাকায় ঘোরাঘুরি করে রাত ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের শোলাকিয়ার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের মারধর করা হয়।

তারা আরও জানিয়েছেন,  রাজধানীর উত্তরার আজমপুর এলাকায় এমআরটি ইঞ্জিয়ানিয়ারিং নামে তাদের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিশোরগঞ্জের পলাশ তাদের পূর্বপরিচিত ছিল। সেই সূত্রে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পলাশ তাদের ব্যবসায়িক পার্টনার হন।  কিছুদিন আগে পলাশকে তার বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু এ নিয়ে তাদের বিরোধ ঘটে পলাশের সঙ্গে। এর জের ধরেই ঢাকা থেকে তাদের অপহরণ করে কিশোরগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয় এবং ২০ লাখ টাকার দাবিতে রাতভর পেটানো হয়। অপহরণকারীরা টাকা না দিলে মেরে ফেলাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। এমন কি মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ারও ভয় দেখায়। গ্রেপ্তারকৃত দুইজনসহ মোট চার জন  ভুক্তভোগীদের অপহরণ করেছিল।
মারধরের এক পর্যায়ে অপহরণের শিকার ব্যক্তিরা তারা টাকা দিতে রাজি হন ও অপহরণকারীদের দেওয়া ফোন থেকে আত্মীয়স্বজনদেরকে ঘটনাটি জানান। পরে স্বজনরাই কিশোরগঞ্জ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে শোলাকিয়া থেকে দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তদের মধ্যে দুই জনকে গ্রেফতার করে।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,  ‘ঘটনাটি ঢাকার ভাটারা থানা এলাকায় ঘটেছে। আমি ওই থানার সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই থানার পুলিশ গ্রেপ্তার দুজনকে নিয়ে যাবে। আর উদ্ধার করা দুজনকেও তাদের জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হবে।’