বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু

বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত)৫৩ দিন বন্ধ থাকার পর আবার উৎপাদনে গেছে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা প্রাপ্তির পর বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টা ২৭ মিনিটে উৎপাদন শুরু করেছে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি। চালু হওয়ার পর ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ওই ইউনিট থেকে ১৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ২২ জুলাই থেকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লার অভাবে বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ঈদের সময় চাহিদা মেটাতে ৯ দিন একটি ইউনিট চালু করা হলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ বলছেন, কয়লার প্রাপ্তি বৃদ্ধি পেলে আগামী সময়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাকি দুটি ইউনিটও চালু করা হবে। একইসঙ্গে চালু হওয়া ইউনিট থেকে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবেও বলে জানানো হয়েছে।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার জানান, ‘মোট ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটের স্টিম চালু করা হয় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ২টা ২৭ মিনিটে ওই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। ওই সময়ে ১৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড করা হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে এই উৎপাদন আরও বাড়বে।’ কয়লার মজুত বাড়লে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দুটি চালু করা হবে বলেও জানান তিনি। চালু না হওয়া দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫ মেগাওয়াট ও ২৫০ মেগাওয়াট।

গত ১৯ জুন বড়পুকুরিয়া খনি থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উধাও হয়ে যায়। কয়লা কেলেঙ্কারির এই ঘটনায় চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলার কাজ পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি (ছবি: প্রতিনিধি)

কয়লার অভাবে গত ২২ জুলাই বন্ধ হয়ে যায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। এরই মধ্যে খনির ক্যানেল তৈরিতে যে সামান্য পরিমাণ কয়লা পাওয়া গিয়েছিল তা দিয়ে গত ২০ আগস্ট শুধু ঈদের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ইউনিট চালু করা হয়। ৯ দিন চালু থাকার পর কয়লা শেষ হয়ে যাওয়ায় তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। টানা ৮৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৮ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে খনি থেকে দৈনিক ২২শ’ থেকে ২৫শ’ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হচ্ছে। আর এই কয়লা উত্তোলন শুরুর ৫ দিনের মাথায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হলো।

আরও পড়ুন- 

বড়পুকুরিয়া খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু

যেভাবে ধরা পড়লো কয়লা খনির দুর্নীতি