‘গোঁফ পোষা আর হাতি পোষা একই কথা’

গোঁফ নিয়ে গর্বিত আজাহার হোসেন

গোঁফ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত খুনসুটি লেগেই থাকে। কখনও কখনও তা বড় ধরনের ঝগড়ায় রূপ নেয়। তবু নিজের গোঁফ ফেলেননি তিনি। সংসার কর্মের মতোই টানা ২২ বছর ধরে গোঁফ লালন-পালন করে যাচ্ছেন। এমনকি বেঁচে থাকতে কোনও দিন গোঁফ কাটবেন না বলেও জানিয়েছেন ১৩ ইঞ্চি দীর্ঘ গোঁফের মালিক এই ব্যক্তি।

নাম আজাহার হোসেন (৫২)। বাড়ি নওগাঁ শহরের বোয়ারিয়া গ্রামে। শহরের লিটন ব্রিজের ধারে নিয়মিত দেখা যায় এই ইয়া-বড়-গোঁফওয়ালাকে। সেখানে ফল বিক্রি করেন। কাজের সময় দু’পাশের গোঁফ গুছিয়ে  কানের পাশ দিয়ে মাথায় তুলে ক্যাপ দিয়ে ঢেকে রাখেন তিনি।

শহরে যারা প্রথম আসেন, আজাহারকে দেখার পর তারা প্রশ্ন করেন- ‘এত বড় গোঁফ কীভাবে করলেন।’ সরাসরি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মুচকি হেসে আজাহার বলেন, ‘গোঁফ পোষা আর হাতি পোষা একই কথা।’

গোঁফ নিয়ে গর্বিত আজাহার হোসেন

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজাহার যখন রাস্তায় বের হন, তাকে ঘিরে জমে ওঠে উৎসুক মানুষের ভিড়। মজার মজার মন্তব্যে আশপাশ মুখরিত করে তোলেন তারা। অনেকের মনে কৌতুহল জাগে- এত বড় গোঁফ তিনি কেন রাখলেন! এত বড় গোঁফ রাখার রহস্য কী? অনেকে আবার তার এই গোঁফ ধরে মোবাইলে সেলফি তুলে রাখেন। সোজাকথা, গোঁফ দিয়েই শহরবাসীর দৃষ্টি কেড়েছেন তিনি। তবে মানুষের কৌতূহলী দৃষ্টির কারণে কখনও কখনও বিব্রতও হন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আজাহার হোসেন বলেন, ‘আমি ২২ বছর ধরে গোঁফ কাটি না। গোঁফের দৈর্ঘ্য এখন  ১৩ ইঞ্চি। এই গোঁফের জন্য প্রতি সপ্তাহে ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা খরচ হয় সেলুনে। এ ছাড়া, প্রতিদিন হেয়ার জেল, কন্ডিশনার ও শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হয়। সব মিলে মাসে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা খরচ হয়। ১০ দিন পর পর চিরুনি বদলাতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এককথায় গোঁফ পোষা আর হাতি পোষা একই কথা।’  

গোঁফ নিয়ে গর্বিত আজাহার হোসেন

যে গোঁফ দিয়ে তিনি মানুষের আগ্রহের কারণ হয়েছেন, সেই গোঁফ রাখার প্রক্রিয়াটা অনেক কঠিন বলেও জানালেন আজাহার হোসেন। তিনি জানান, স্ত্রী গোঁফ সহ্য করতে পারেন না। তাই গোঁফ রাখার কারণে সংসারেও অশান্তি হয়েছে। তবু গোফঁ কাটেননি তিনি।

শহরে তার নাম এখন ‘মোচুয়া’ হয়ে গেছে জানিয়ে গোঁফপ্রেমী আজাহার আরও বলেন, ‘সন্তানরা এই গোঁফ পছন্দ করে। তারা বলে আমি নাকি দেখতে সিনেমার জমিদারের মতো।’

বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়ার বাসনা প্রকাশ করে মজা করে তিনি আরও বলেন, ‘টেলিভিশনে দেখি, মেয়েরা যে চুল নিয়ে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন করে তা আমার গোঁফের চেয়ে ছোট।’