চাঁদপুরে রিটার্নিং অফিসারের অপসারণ দাবি বিএনপির

বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলনচাঁদপুর জেলার রিটার্নিং অফিসার (জেলা প্রশাসক) মো. মাজেদুর রহমান খানের অপসারণ দাবি করেছে জেলা বিএনপি। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর দলটির আবেদনের পরও দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করায় এ দাবি জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানায় জেলা বিএনপি।

মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লা সেলিম বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ চেয়ে অনুরোধ জানায়। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা না করে তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে আমি তাকে বললাম, আপনি যখন ডিসি ছিলেন তখন আপনি আওয়ামী লীগের ডিসি ছিলেন। এখন আপনি রিটার্নিং অফিসার। বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। নির্বাচন বিষয়ে আমাদের আপনার সঙ্গে দেখা করা দরকার। তাই আপনার আমাদের সঙ্গে দেখা করতে হবে। তখন জবাবে রিটার্নিং অফিসার বলেন, “নো, আমি আপনাদের সাথে দেখা করতে বাধ্য নই।” পরে একপর্যায়ে তিনি বলেন, “আপনি একা আসেন।” তখন আমি বললাম, না, বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট একজনের দল না।’

তিনি বলেন, ‘যখন উনি কোনওভাবেই আমাদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না তখন আমি তাকে অনুরোধ করে বলি- আমরা জাস্ট আপনার সঙ্গে পরিচিতির জন্য যাবো। তাও উনি রিজেক্ট করলেন। এ অবস্থা যদি একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার হয় তাহলে আমরা সুষ্ঠু এবং নিরপক্ষে নির্বাচন কিভাবে আশা করবো।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাঁতার কাটার মতো অবস্থা।’

মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চাঁদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, ‘কয়েকদিন আগে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় এসেছে যে  রিটার্নিং অফিসার বলেছেন, নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকা যাবে না। তাহলে নাকি খারাপ লোকেরা চলে আসবে। খারাপ-ভালো নির্বাচন করবে জনগণ। তারা যাকে ভোট দেবেন তারাই বিজয়ী হবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা যদি নিরপেক্ষ না থাকার কথা বলেন, তাহলে কীভাবে তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? তিনি আমাদেরকে দেখা করার সুযোগ দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করে মিছিল করছে। আর আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তফসিল ঘোষণার পরও একটি মামলা করা হয়েছে। এসব মিলে এই রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে সুষ্ঠু ও নিরক্ষে নির্বাচন নিয়ে আমাদের আশংকা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক সবার জন্য। সব নাগরিকের জন্য। একজন নাগরিক হিসেবেও আমরা তার সঙ্গে  দেখা করতে পারি, কথা বলতে পারি। সেই সুযোগও তিনি দিচ্ছেন না।’

তবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী যে কেউ আসতে পারে। এক্ষেত্রে কোনও বাধা-নিষেধ নেই। যে কোনও সময়ই আসতে পারে।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, বিএম হান্নান, শহীদ পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুজ্জামান মন্টু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আনোয়ার বাবলু, মুনির চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান সফিকুজ্জামান, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট হারুনুর রশিদ, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন খান আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহারসহ জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।