আপনাদের এক-একটি ভোট খালেদা জিয়ার মুক্তির সনদ: কাদের সিদ্দিকী

গাজীপুরের মাওনায় এক পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। পাশে আ স ম আবদুর রব, কাদের সিদ্দিকী ও অন্যরা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী এক নির্বাচনি পথসভায় বলেছেন,‘আগামী ৩০ তারিখে আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেবেন। আপনাদের এক-একটি ভোট খালেদা জিয়ার মুক্তির সনদ। আপনাদের ভোটে বিজয়ী হয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসব।’

শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর পাশে এক পথসভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত গাজীপুর-৩ (শ্রীপুর-পিরুজালী-ভাওয়ালগড়-মির্জাপুর) আসনের প্রার্থী ইকবাল সিদ্দিকীর নির্বাচনি পথসভায় কর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন,‘নির্বাচনের আগের দিন থেকে কেন্দ্র পাহারায় থাকতে হবে। ভোট কারচুপি বা কেন্দ্র দখলের মতো কোনও ঘটনা যাতে কেউ না ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশের পর কেন্দ্র ত্যাগ করে বাড়ি যেতে হবে। যত অত্যাচার-নির্যাতন আসুক না কেন, সব মাথা পেতে নিয়ে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’

কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘এখনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের কথা শুনছেন না।’ ভোটার ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা অপেক্ষা করুন। ২২ তারিখের পরে পুলিশ প্রশাসনসহ প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। কোনও ধরপাকড়, গ্রেফতার ও নির্যাতন হবে না।’ 

সভায় প্রধান অতিথি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর গণজাগরণ হবে। ১৯৭০-এর নির্বাচনে যেমন ভোটের বিপ্লব হয়েছিল এবার তেমনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটের বিপ্লবে ধানের শীষের বিজয় হবে।’

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘শক্তিশালী কেন্দ্র কমিটি গঠন করে ভোটের আগের দিন রাত থেকে কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। ভোটের আগের রাতে যেন সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখতে না পারে সে ব্যাপারে কড়া পাহারা দিতে হবে।’ 

এ সময় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এবার আমরা যুদ্ধে নেমেছি। এ যুদ্ধে তাদের কাছে অস্ত্র আছে, আমাদের পক্ষে সাধারণ জনগণ আছে। তাদের পক্ষে নেই। এখন ভোটের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দিলে তারা লেভেল হয়ে যাবে।’

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর মানুষের অধিকার রক্ষার নির্বাচন, দুঃশাসনের অবসান এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্বাচন। ক্ষমতাসীনরা হারতে চায় না। তারা ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পায়। যারা অত্যাচারী হয় আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না। তারা পরাজিত হবে।’

নেতারা তাদের বক্তব্যে আরও বলেন, ‘২৪ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলাম, কোনও নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করবেন না।’ পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে তারা বলেন, ‘আপনারা আমাদের ভাই। আমরা এ দেশের নাগরিক।’

ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে বিরোধী দলের ওপর কোনও অত্যাচার-নির্যাতন করা হবে না বলেও উল্লেখ করেন নেতারা।

শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকিরের সভাপতিত্বে ও শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় এ নির্বাচনি সভায় আরও বক্তব্য দেন– ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. সফিকুল ইসলাম আকন্দ, গাজীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, শ্রীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী খান, শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ শহীদ প্রমুখ।

কর্মিসভা শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা দেন।