গার্মেন্টস শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত সুমনের পরিবার এখন দিশেহারা

নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক সুমনের বাড়িতে শোকতুর স্বজনরা (ইনসেটে সুমন)ঢাকার সাভারে গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক সুমন মিয়ার (২২) বাড়ি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে। সুমন ওই গ্রামের আমীর আলীর ছেলে।

মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাভারের ওলাইন এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে সুমন মারা যায়। এখন সুমন মিয়ার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

বুধবার নিহত সুমন মিয়ার কলাকান্দা গ্রামে সুমন মিয়ার বাড়িতে গেলে বাবা আমীর আলী জানান, তিনি ঢাকায় একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের কাজ করেন। তার স্ত্রী গৃহিণী। তাদের সংসারে দুই ছেলে তিন মেয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে সুমন সবার ছোট। সুমন প্রায় দুই বছর যাবৎ ঢাকার সাভারের আনলীমা অ্যাপারেলস পোশাক কারখানার ফিনিশিং সেকশনে কাজ করতেন। মঙ্গলবার গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় সুমন নিহত হন।

তিনি আরও জানান, সুমনের লাশ ঢাকা থেকে বাড়িতে এনে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

এ সময় সুমনের মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘সুমন মাসে মাসে টাকা পাঠাতো। ওই টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলতো। দুই দিন আগেও সে ফোন করে বলেছে, “মা আমি তোমার আর বড় আপার জন্যে কাপড় নিয়ে আসবো। তোমরা আমার জন্য দোয়া কোরো। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া কোরো। এখন সুমন আর আমাকে মা বলে ডাকবো না। এ ব্যথা কীভাবে সইবো, কীভাবে চলবে সংসার?’ এসব কথা বলেই আহাজারিতে ভেঙে পড়েন হতভাগ্য মা ফিরোজা বেগম। পাশে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তার বড় বোন আর ভাগ্নিরাও। পরিবারে সবার প্রিয় এ ছেলেটির মৃত্যুতে হতদরিদ্র পরিবারটি এখন দিশেহারা।

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমীন বলেন, ‘সুমনের নিহত হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তার পরিবারের পক্ষ থেকেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’