চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞাকুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে তা মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচার করে উপজেলা প্রশাসন। চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইউএনও জানান, ‘বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুসারে সরকার ঘোষিত বালুমহল ছাড়া বালু উত্তোলন করা আইনত দণ্ডনীয়। চিলমারীতে কোনও বালুমহাল নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে করে নদী ভাঙন বাড়ছে এবং নদী তীরবর্তী স্থানীয় বাসীন্দারা আবাদি জমি ও বসতবাড়ি হারিয়ে ফেলছেন। প্রশাসন থেকে বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে নিষেধ করলেও তা কোনোভাবে বন্ধ করা যাচ্ছিল না। ফলে এবার আমরা নিষেধাজ্ঞা জারি করে তা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত মাইকিং করে স্থানীয়দের অবগত করা হচ্ছে।’

ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির খবরে নদ তীরবর্তী এলাকার মানুষসহ উপজেলার হাজারো মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছেন বলে জানান প্রায় এক দশক ধরে জেলার বিভিন্ন নদ-নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সংগঠন রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ। তিনি বলেন, ‘এটা উপজেলার মানুষের প্রাণের চাওয়া। উপজেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে এলাকার মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা উপজেলা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’

বিভিন্ন সময় গণমানুষের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা অরাজনৈতিক সংগঠনের এ নেতা আরও বলেন, ‘উলিপুরের ফকিরের হাট থেকে শুরু করে ব্রহ্মপুত্রের উভয় তীরে চিলমারী-রৌমারীর কমপক্ষে ৫০টি স্পটে অবৈধভাবে বালু ঘাট বানানো হয়েছে। বিশেষ করে রাণীগঞ্জ, রমনা ও জোড়গাছে বালুর স্পটগুলো বিদ্যমান। এসব পয়েন্টে বালু উত্তোলনের ফলে কৃষি জমি, মাছ-পাখি-কাছিমের আবাস ধ্বংসের পাশাপাশি বায়ু দূষণের ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।’ 

ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত জানিয়ে নাহিদ হাসান নলেজ আরও বলেন, ‘এরা রাষ্ট্রের সম্পদ (বালু) লুট করে তা প্রতি টন ১ হাজার থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি করে। এসব বালু সন্ত্রাসীদের আগ্রাসন বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পাশাপাশি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাও বন্ধ করতে হবে।’

এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আগামী রবিবার থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে বলে জানান চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা।