প্রশাসনের অনেকেই মনে করে তারা জনপ্রতিনিধিদের চেয়েও পাওয়ারফুল: শামীম ওসমান

বক্তব্য রাখছেন শামীম ওসমানপ্রশাসনের অনেকেই এখন নিজেদেরকে জনপ্রতিনিধিদের চেয়েও অনেক বেশি পাওয়ারফুল পারসন মনে করছেন বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের আল্লামা ইকবাল রোডে সরকারি তোলারাম কলেজে এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শামীম ওসমান বলেন, ‘প্রশাসন এখন মনে করছে তারা জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে অনেক ওপরে উঠে গেছে। তাই ছাত্র সমাজ চুপ থাকার কারণে আজ দেশে শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, ছাত্রীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাজাকার, আল বদররা দেশকে ধমক দেয়।’

ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের দায়িত্ব আছে। তবে প্রশাসন তোমার মালিক না। তোমার ট্যাক্সের টাকায় প্রশাসন লালিত পালিত হয়। তবে সমস্যা হয়ে গেছে, প্রশাসনের অনেকেই এখন মনে করে তারা জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে অনেক পাওয়ারফুল পারসন। তাই আমি চাই দেশের পক্ষে কথা বলার জন্য কিছু যোগ্য নাগরিক সৃষ্টি হোক। তোমরা নিজেদেরকে যোগ্য ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলে দেশের দায়িত্ব নাও।’ তিনি নারায়ণগঞ্জে মাদক, সন্ত্রাস ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ছাত্রসমাজের প্রতি জোর আহবান জানান।

শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার সময় শেষ হয়ে আসছে। প্রতিবাদ করার লোক আমি নারায়ণগঞ্জে পাচ্ছি না। তাই সকল অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে তোমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। তোমাদের অধিকার তোমাদেরকেই আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে রাস্তায় নামতে হবে।’

ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি দেশের প্রতি দায়িত্ব পালনেরও তাগিদ দেন শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্ররা যদি রাস্তায় নামে তাহলে নারায়ণগঞ্জে মাদক, ইভটিজিং, ধর্ষণ, চাঁদাবাদি কোনও কিছুই থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘রাজনীতি না করেও দেশকে ভালোবাসা যায় এবং দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করা যায়। এই তোলারাম কলেজ থেকে আমার রাজনীতি জীবন শুরু। এখান থেকেই শেষ করতে চাই। তোমাদের সঙ্গে নিয়ে এটা আমার শেষ লড়াই। আমি চাই তোমরা দেশকে ভালোবেসে দেশের কাজে এগিয়ে আসো।’

সরকারী তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-উপাধ্যাক্ষ আমিনুল ইসলাম, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক জীবন কৃষ্ণ মোদক।