মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, কাউন্সিলরসহ গ্রেফতার ২২

নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৮ নস্বর ওয়ার্ড এলাকায় মসজিদের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ১৫ জন। রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীর বাপ্পি চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।এ ঘটনায় পুলিশ ১৮ নস্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে দক্ষিণ নলুয়া জামে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন ও মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে এশার নাজাজের পর মসজিদ কমিটির লোকজন মিটিংয়ে বসে। এসময় বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেনের ভাগ্নে আল আমিন টিপু মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুললে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার চাচা সাদেক হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে কামরুল হাসান মুন্নার লোকজন টিপুকে মারধর করে। এ ঘটনায় টিপু নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। পরে বিষয়টি তদন্ত করতে পুলিশ ওই এলাকায় যায়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে কামরুল হাসান মুন্নার নেতৃত্বে লোকজন গিয়ে টিপুর বাড়িত হামলা চালায়। পরে কাউন্সিলর কবির হোসেনের নেতৃত্বে তার লোকজন  মুন্নার বাড়ির সামনে গেলে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও কামরুল হাসান মুন্নার দুই ভাই রানা ও তানহাসহ প্রায় ১৫ জন আহত হয়। এসময় দুইপক্ষের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নিলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে  আনে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার হওয়ার আগে কামরুল হাসান মুন্না বলেন, ‘টিপু একজন মাদকাসক্তক। সে আমার চাচা সাদেক হোসেনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় স্থানীয় লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি করে। এ নিয়ে আল আমিন টিপু থানায় অভিযোগ দেয়। পুলিশ তদন্ত করতে এলাকায় এলে পুলিশের সঙ্গেই আমি ওই বাড়িতে যাই ঘটনা জানার জন্য। কিন্তু টিপুর স্ত্রী বিষয়টি কাউন্সিলর কবির হোসেনকে জানায়। কাউন্সিলর টিপুকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়ির সামনে এসে রাতের  বেলায় হৈচৈ ও গালিগালাজ করে। পরে আমি বাসা থেকে বর হয়ে আসি। পরে সংঘর্ষ হয়। এতে আমার দুই ভাই রানা ও তানহার মাথা ফেটে যায়।

বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন বলেন, ‘দক্ষিণ নলুয়া মসজিদের হিসাব চাওয়ায় কাউন্সিলর মুন্নার লোকজন আমার ভাগ্নে টিপুকে মারধর করে। পরে আবার তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। বিষয়টি কাউন্সিলর মুন্নাকে জিজ্ঞাসা করতে রাতে তার বাড়ির সামনে গেলে মুন্নার নেতৃত্বে আমার ওপর হামলা চালানো হয়।’

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, ‘এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বর্তমান কাউন্সির কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না গ্রুপের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। কয়েক দিন পরপরই এই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘষ হয়। রোববার রাতেও দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করে।  

তিনি আরও জানান, কবির হোসেনকে থানার পুরুষ হাজতখানায় এবং কামরুল হাসান মুন্নাকে নারী হাজতখানায় রাখা হয়েছে। যাতে করে হাজতথানায় মারামারি করতে না পারে।