ফেনীতে স্কুলছাত্র শুভকে হত্যার দায় স্বীকার সহপাঠীর

আরাফাত হোসেন শুভফেনী শহরতলির তেমুহনীতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেন শুভ (১৪) হত্যার ঘটনায় সহপাঠী মো. ইসমাইল হোসেন ইমনকে (১৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ এপ্রিল) বিকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে ইমন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সুরেজিৎ বড়ুয়া গত সোমবার বিকালে পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্যম মাথিয়ারা গ্রামের আবদুস সালাম মিস্ত্রির বাড়ি থেকে মো. কামাল উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন ইমনকে গ্রেফতার করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সে। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ইমন একাই ছুরি দিয়ে শুভকে খুনের কথা জানায়।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমন জানায়, তেমুহনী মাদার কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে। শুভও একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। গত ৩০ জানুয়ারি বিকালে সে শুভর কাছে এক সহপাঠীর মোবাইল নম্বর ও ছবি চায়। এ নিয়ে শুভ ও ইমনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শুভ ইমনের মায়ের প্রসঙ্গ তুলে গালমন্দ করে। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে শুভকে হত্যার পরিকল্পনা করে। কোরবানির ঈদে কেনা ছুরি পকেটে নিয়ে শুভকে সে তেমুহনী আসার জন্য ফোন দেয়। শুভ ৪টার দিকে সাইকেল চালিয়ে তেমুহনীতে এলে কথা বলতে বলতে মাথিয়ারা দোকানের পেছনে ঝোঁপের কাছে নিয়ে যায় ইমন। একপর্যায়ে কথা বলার ফাঁকে ইমন শুভর গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ‘তুই কী করলি’ বলে শুভ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন তার বুকের ওপর উঠে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ইমন। পরে ছুরিটি টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে প্যান্টের পকেটে রাখে। গায়ে রক্তের দাগ পড়লে পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসায় গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে বাড়ি চলে যায়।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম জানান, ইমন একাই ছুরি দিয়ে শুভকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ইমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাড়ির আলমারি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শুভর মা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

প্রসঙ্গত, আরাফাত হোসেন শুভ ৩১ মার্চ বিকালে সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী থেকে নিখোঁজ হয়। পরদিন ভোরে মাথিয়ারা ঝোপ থেকে শুভর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।