তোফা-তহুরার জন্য ‘সুখের নীড়’

তোফা-তহুরার জন্য নির্মিত ঘর সুখের নীড়অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা হওয়া গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের জমজ শিশু তোফা-তহুরা নতুন পাকা ঘর পেল। কোমরের নিচে জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশু দুটির জন্য ‘সুখের নীড়’ নামে একটি পাকা ঘর করে দিয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ঝিনিয়া গ্রামে বাবা সাজু মিয়ার বাড়িতে নির্মিত  এ ঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

তোফা-তহুরার জন্য ‘সুখের নীড়’ নামে আলাদা পাকা ঘর পেয়ে খুশি স্বজনরা। মা শাহিদা বেগম বলেন, ‘বর্তমানে দুই মেয়েই সুস্থ্ আছে। দুজনেই একসঙ্গে হেসে-খেলে বড় হচ্ছে। তবে মাঝে মাঝে তহুরা অসুস্থ্ হয়ে পড়ে। ঠিকভাবে খায় না, পেশাব-পায়খানারও সমস্যা হয়। জন্মের পর থেকে সব সময় চিকিৎসক, সরকার ও প্রশাসন তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। অভাবের সংসারে স্বামী সাজু মিয়া ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের সহায়তায় সেখানে চাকরি করছেন। কিন্তু মাসিক ছয় হাজার টাকা পেলেও তা দিয়ে সংসার ঠিকভাবে চলে না।’ তিনি সাজু মিয়ার স্থায়ী একটা ভালো চাকরির দাবি জানান।

উদ্বোধনের পর তোফা-তহুরার সঙ্গে জেলা প্রশাসকএ উপলক্ষে তোফা-তহুরার বাবা সাজু মিয়ার বাড়ির চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোলেমান আলীর সভাপতিত্বে এ সভায় বক্তব্য রাখেন– জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এটিএম মকবুল হোসেন প্রামাণিক, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবীর মুকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম প্রমুখ। এছাড়া রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সুধীমহল ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন ফিতা কেটে শিশু তোফা-তহুরার ঘরের উদ্বোধন করেন। 

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরের নিচে জোড়া লাগানো অবস্থায় নানা বাড়িতে জন্ম নেয় তোফা-তহুরা। পরে ৭ অক্টোবর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয় তাদের। এরপর ১৬ অক্টোবর তোফা-তহুরার প্রথম অস্ত্রপাচার করা হয়। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট সফল অপারেশনের মাধ্যমে তাদের আলাদা করেন ঢামেকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। ১০ সেপ্টেম্বর ঢামেক থেকে নানা শহিদুল ইসলামের বাড়ি সুন্দরগঞ্জের কাশদহ গ্রামে ফিরে আসে তোফা-তহুরা। এ পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য তাদের কয়েকবার স্থানীয় হাসপাতাল ছাড়াও ঢামেকে নেওয়া হয়েছিল। পূর্ণ সুস্থ্তার জন্য তাদের দরকার আরও দুই ধাপ অপারেশন। তহুরা এখনও ভুগছে মূত্র জটিলতায়। তোহা-তহুরার পরিবার চাওয়া, তাদের পাশে সবাই থাকুক।