মাগুরার সেই চিকিৎসকের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ

মাসুদুল হকমাগুরার বিতর্কিত সেই চিকিৎসক মাসুদুল হককে তার চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে মাগুরার সিভিল সার্জন। এছাড়া মাসুদুল হকের অপচিকিৎসার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৮ জুন) মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার পাঠানো আদেশপত্রে সিভিল সার্জন লিখেছেন, মাগুরা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ১৬ জুন মাসুদুল হকের অপচিকিৎসার বিষয়ে নানা তথ্য প্রমাণসহ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এছাড়া গণমাধ্যমেও তাকে নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত মাসুদুল হক চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

চিকিৎসকের কার্যক্রমের প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল

অভিযোগ রয়েছে, মাসুদুল হক নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রোপচারসহ অপচিকিৎসা করছেন। তিনি নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি পিজিটি, সিডিডি সার্জন বলে দাবি করে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি কোনও চিকিৎসকই নন। তিনি এইচএসসি পাস । ১৫ বছর রাশিয়ায় থেকে একটি ডিপ্লোমা সনদ জোগাড় করেছেন। পরে দেশে ফিরে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয়ে অস্ত্রোপচারসহ নানা প্রকার অপচিকিৎসা শুরু করেন।

২০০৫ সালে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক রোগীর খাদ্য নালিতে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে একটি নাড়ি কেটে গেলে ক্ষতস্থানে পলিথিন বেঁধে দেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। সেখানে পুনরায় অস্ত্রোপচার করে ওই পলিথিন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার পর মাসুদুলকে ‘পলিথিন ডাক্তার’ উল্লেখ করে পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখিও হয়। যার সূত্র ধরে স্থানীয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠায়।

চিকিৎসকের কার্যক্রমের প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল২০০৬ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে ড্যাবের সদস্য পদ নেন ও বিএমডিএস ঢাকায় চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধিত হন, যার নম্বর-এ-৪৩২১৪। এই নিবন্ধনের পর তিনি মাগুরায় ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। এখনও সেখানেই কর্মরত আছেন।

মাসুদের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে গত ২ বছরে ঝিনাইদহের হাট গোপালপুর গ্রামের মিতু রানী, মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের কাজল বেগম, শ্রীপুরের নলখোলা গ্রামের সালমা বেগমসহ অনেক প্রসূতি মারা গেছেন। এছাড়া মাগুরা সদরের শান্তিপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিসহ অনেকে তার কাছে অর্থোপেডিক সমস্যায় অস্ত্রোপচার করে পঙ্গু হয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন:

এইচএসসি পাস এমবিবিএস ডাক্তার!