চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ এর ৮৮ শতাংশই মহানগরীর

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডবরাবরের মতো এবারও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শহরের সঙ্গে গ্রামের পড়াশোনার ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম জেলার ১৪টি উপজেলা মিলিয়ে ৩৪১ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। আর শুধু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকা থেকেই এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন দুই হাজার ৫১৯ জন। বোর্ডের মোট জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর প্রায় ৮৮.০৮ শতাংশই মহানগরীর।

শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী নয়, গ্রামে পাসের হারও অনেক কম। এবার রাঙামাটি জেলায় পাসের হার মাত্র ৪৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ একই পরীক্ষায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবার পাসের হার ৭৫ দশমিক ৩২ শতাংশ।

অভিভাবকদের অভিযোগ, দক্ষ শিক্ষকের অভাবে গ্রামের শিক্ষার্থীরা ফলাফল খারাপ করছে। তারা শিক্ষা ব্যবস্থায় নগর-গ্রাম ব্যবধান কমিয়ে আনতে নগরীর বাইরে জেলা উপজেলার কলেজগুলো দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।

ওমর ফারুক নামে এক অভিভাবক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গ্রামে দক্ষ শিক্ষকের অভাব। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও ইংরেজির শিক্ষক নেই বললেই চলে। এ কারণে গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা শহরের শিক্ষার্থীদের থেকে পিছিয়ে। তাই তারা পরীক্ষায়ও খারাপ ফলাফল করেছে।’ তিনি গ্রামীণ কলেজগুলোতে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

বুধবার (১৭ জুলাই) প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলে দেখা যাচ্ছে, কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৬জন, রাঙামাটি থেকে পেয়েছে আট জন, বান্দরবান থেকে পেয়েছে ২১জন এবং খাগড়াছড়ি থেকে পেয়েছে ১৫জন।

অন্যান্যবারের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন দুই হাজার ২৫৮জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদেরও প্রায় ৯০ শতাংশই নগরীর। অপরদিকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭৩ জন, মানবিক থেকে পেয়েছে মাত্র ১২৯জন।

এ সর্ম্পকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাস্তবেই শহরের সঙ্গে গ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থার একটা ব্যবধান আছে। এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে সামগ্রিক পাসের হার ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। অথচ এই একই পরীক্ষায় এবার নগরীতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। গ্রামের কলেজগুলো ফলাফল খারাপ করায় নগরীতে ৭৫ দশমিক ৩২ শতাংশ পাস করার পরও সামগ্রিক ফলাফল খারাপ হয়েছে। গ্রামের শিক্ষার্থীরা একটু ভালো ফলাফল করলে সামগ্রিক পাসের হার অনেক বাড়তো।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ কলেজগুলোতে দক্ষ শিক্ষকের অভাব। শিক্ষা উপকরণের সহজলভ্যতাও কম। অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা করতে হয়। এ কারণে বরাবরই নগরীর বাইরে জেলা উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলোতে ফলাফল খারাপ হয়। তাই গ্রামের কলেজগুলোতে পড়াশুনার মান বাড়াতে হবে। শহরের মতো সব সুযোগ সুবিধা ওইসব কলেজে দিতে হবে। তাহলে পাসের হার অটোমেটিক বেড়ে যাবে।’

আরও পড়ুন- দিনাজপুর বোর্ডে ইংরেজিতে ফেল ২৯ হাজার