শিশুসন্তান কাঁদছে, পাশে মায়ের নিথর দেহ

অভিযুক্ত মাইদুল ইসলাম বাবুকুড়িগ্রাম শহরের হাটিরপাড় এলাকায় একটি বাড়ির নিজ ঘর থেকে শারমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৯ অক্টোবর) সংঘটিত এ ঘটনায় শারমিনের স্বামী মাইদুল ইসলাম বাবু পলাতক রয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

লাশ উদ্ধারের সময় শারমিনের নিথর দেহের পাশে তার চার বছরের শিশুসন্তানকে কাঁদতে দেখা গেছে। নিহত শারমিন জেলা শহরের হাটিরপাড় এলাকার শাহাবুদ্দিনের মেয়ে। তিনি একই এলাকায় স্বামী ও শিশুপুত্র মো. শিশিরকে নিয়ে বসবাস করতেন।

সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহত শারমিনের গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। দাম্পত্য কলহ থেকে শারমিনকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

শারমিনের মা শাহিনা আক্তার জানান, সকাল ১০টার দিকে শারমিনের বাড়িতে দেখা করতে গেলে ঘরের ভেতর শিশু শিশিরের কান্না শুনতে পান তিনি। পরে ধাক্কা দিয়ে ঘরের দরজা খুলে বিছানায় শারমিনকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

তিনি আরও জানান, শারমিন হাটিরপড় এলাকায় গ্রিন লাইফ ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। ২০০৮ সালে প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর থেকে বাবু ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য তাকে নানাভাবে অত্যাচার করতে থাকে। এ ঘটনায় শারমিন তার স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলাও করেন। চার বছর মামলা চলার পর তারা আপস মীমাংসা করেন। এরপরও বিভিন্ন সময় শারমিনকে মারধর করতো বাবু। গত ১০-১৫ দিন আগে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে হত্যাচেষ্টাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন শারমিনের মা।

শারমিনের ছেলে শিশিরের বরাত দিয়ে শারমিনের মা বলেন, ‘রাতে শারমিনকে মারধর করেছে বাবু। শারমিনের মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত বের হতেও দেখেছে তার ছেলে। আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়েছে পাষণ্ড মাইদুল ইসলাম বাবু। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।’

এ ঘটনায় বাবু পলাতক রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘শারমিনের স্বামীকে আমরা গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’