বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আন্দোলনের মুখে সাবেক ভিসি নাসিরউদ্দিনের ভাতিজার পদত্যাগ

খোন্দকার মাহমুদ পারভেজআন্দোলনের মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের চেয়ারম্যান খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকাল চারটায় বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নুরউদ্দিন আহমেদ। মাহমুদ পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ভাতিজা।
রবিবার সকাল থেকে বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বৈরাচারি আচরণ এবং অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে ক্লাস বর্জন করে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ ২০১৭ সালে প্রথমে সেকশন অফিসার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে অনার্স ও মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি থাকা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান। মাত্র দেড় বছরেই সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করলেও চেয়ারম্যান হওয়ার পর স্বেচ্ছাচারি হয়ে ওঠেন এই শিক্ষক। কথায় কথায় শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। নিজের ক্ষমতা দেখানোর জন্য অ্যাসাইনমেন্ট ও পরীক্ষায় অকারণে নম্বর কম দেন।
বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনএ বিভাগের শিক্ষার্থী অভি রহমান বলেন, ‘তিনি সম্প্রতি একটি কোর্সের অ্যাসাইনমেন্টে ৩৪ জনকে শূন্য দিয়েছেন। আমরা যখন কারণ জানতে চেয়েছি তিনি বলেছেন তার ইচ্ছে হয়েছে তাই শূন্য দিয়েছেন। একজন শিক্ষক কীভাবে এমন হতে পারেন। তার আচরণে মনে হয়েছে আমরা তার খেলার পুতুল।’
সম্রাট নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তিনি ভিসির ভাতিজা হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। ক্লাসেও ঠিকভাবে পড়াতে পারেন না। উইকিপিডিয়া দেখে দেখে বানান করে পড়ান। এছাড়া কোনও বিষয়ে প্রশ্ন করলেই রেগে যান, হুমকি দেন শিক্ষাজীবন নষ্ট করে দেওয়ার।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ। তিনি বলেন, ‘অনার্স ও মাস্টার্সে দ্বিতীয় শ্রেণি রয়েছে এ কথা সত্যি। কিন্তু আমার নিয়োগ অবৈধ নয়। কারণ নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দু’টি শর্ত শিথিলযোগ্য রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চলমান থাকায় এবং রবীন্দ্র জার্নালে চারটি প্রকাশনা থাকায় অধিকতর যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আমাকে বিবেচনা করা হয়েছে।’
এর আগে সকালে আন্দোলন শুরুর দিকে ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. রাজিউর রহমান। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ লিখিতভাবে জমা দিতে বলেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন। প্রক্টরের আশ্বাসে লিখিত অভিযোগে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।