টাকা নিয়েও ভিজিডি’র কার্ড দেননি ইউপি চেয়ারম্যান

আফতাব আলী মণ্ডলনওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফতাব আলী মণ্ডলের বিরুদ্ধে ভিজিডি’র (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) কার্ড দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। ভুক্তভোগীরা কার্ড পাওয়ার আশায় তাকে টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু  চেয়ারম্যান কার্ড দেননি। গত একবছরে টাকা ফেরত না পেয়ে এখন চেয়ারম্যানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

বলিহার ইউনিয়নের পয়না গ্রামের খোরশেদের স্ত্রী সাবিনা বলেন, ‘আমার স্বামী একজন ভ্যানচালক। কষ্ট করে সংসার চলে।  একবছর আগে চেয়ারম্যানের ছেলে জুয়েল আমার বাড়িতে এসে ভিজিডির কার্ড করে দেওয়া হবে জানিয়ে তার বাবার নাম করে টাকা দিতে বলেন। কয়েকদিন সময় নেওয়ার পর সুদের ওপর সাড়ে চার হাজার টাকা নিয়ে জুয়েলকে দেওয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদে যেদিন কার্ড দেওয়া হয়, সেদিন সবাই কার্ড পেলেও আমি পাইনি। পরে দুদিন জুয়েলের বাড়িতে গেলেও তিনি দেখা করেননি। এরপর চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাড়ে চার হাজার টাকায় এক বছরে পাঁচ হাজার ৪০০ টাকা সুদ দিতে হয়েছে।’

টাকা দিয়েও কার্ড পাননি ভুক্তভোগীরাএকই গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী মাসুদা বেগম বলেন, ‘তার স্বামী ইটভাটায় কাজ করেন। কার্ড করে দেবে বলে সুদে সাড়ে চার হাজার টাকা এনে জুয়েলকে দেওয়া হয়। কিন্তু আজও সেই কার্ড পাইনি। টাকা ফেরত চাইলে সময় চায়। কিন্তু সময় মতো টাকা দেয় না। এনজিও থেকে টাকা ঋণ নিয়ে সেই সুদের টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এখনও আমার টাকা ফেরত পাইনি।’

একই গ্রামের বয়জ্যেষ্ঠ বিশ্বনাথের কাছ থেকে ৪ হাজার ১০০ টাকা,  বিধবা রওশন আরার কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। তারা বলেন, চেয়ারম্যান মোটরসাইকেল চালাতে পারেন না। এজন্য তার ছেলে জুয়েল মোটরসাইকেলে করে চেয়ারম্যানকে নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। কার্ড করে দেওয়া হবে বলে তার বাবার নাম করে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে জুয়েল। চেয়ারম্যান তার ছেলেকে দিয়ে এসব করিয়ে নেন।’

চেয়ারম্যান আফতাব আলী মণ্ডলের  ছেলে জুয়েল বলেন, ‘কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছি সত্য। ৮ থেকে ১০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তবে কার্ড করে দিতে দেরি হচ্ছে। ’

আফতাব আলী মণ্ডল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কার্ড করে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নাই। জুয়েল এখন আমার সঙ্গে থাকে না।  আমার নাম করে যদি কেউ টাকা নেয়, তার দায় তো আমি নেবো না। আর এলাকাবাসী তো বিষয়টি আমাকে জানায়নি।’

নওগাঁ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’