২০ হাজার মানুষের পারাপারে একমাত্র ভরসা বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো

বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা মরাখালের ওপর তৈরি বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ— এই খালের ওপরে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দা মরাখালের ওপরে  আগে একটি কংক্রিটের ব্রিজ ছিল। ২০১৯ সালের বন্যার পানির স্রোতে ওই ব্রিজটি ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ দিয়ে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করে। ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই বাঁশের সাঁকোটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

উপজেলা শহর থেকে শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে বড়াইকান্দি বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মাঝে ওকড়াকান্দা মরাখালে  একটি পাকা সেতু নির্মাণের  দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, ওকড়াকান্দা, চৎলাকান্দা, বোয়ালমারী, শৌলমারী, ডাংগুয়াপাড়াসহ ১৫টি গ্রামের  স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০/২৫ হাজার মানুষকে এই বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

ওই এলাকার আব্দুর ছালাম, আশরাফ আলী, খিয়াস উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম ও আয়নাল হকসহ আরও অনেকে জানান, রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশেই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ব্রিজটির বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত  থাকলেও তারা কার্যকরী কোনও ভূমিকা রাখছেন না।

স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু হাফিজ, সিমা আক্তার ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সেলিনা খাতুন, তাজনাহার ও আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই নড়বড়ে এই বাঁশের সেতু দিয়ে কলেজে যাতায়াত করছি।  সেতুটির কথা মনে হলে ভয় লাগে।কলেজে যেতে ইচ্ছা করে না। আমরা চাই , এখানে দ্রুত একটি পাকা ব্রিজ তৈরি করা হোক।’

রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এইচএম হুমায়ুন কবির বলেন,‘এখানে আগে একটি ব্রিজ ছিল। এবারের বন্যায় সেটা ভেঙে গেছে।  কিন্তু ব্রিজটি নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে নীরবতা পালন করছে। ’

শৌলমারী ইউনয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল জানান, বন্যায় ওকড়াকান্দা মরাখালের ওপরের ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। ব্রিজটি নির্মাণের জন্য আমরা রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে একাধিকবার যোগাযোগও করেছি। কিন্তু তারা কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।’ তিনি বরেন, ‘বাঁশের সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের বন্যায় ব্রিজটি ভেঙে গেছে। বন্যার ক্ষয়-ক্ষতির তালিকায় ওই ব্রিজটির  কথাও উল্লেখ আছে। কিন্তু এখনও বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’