ইবাদত-বয়ানে মশগুল ইজতেমা ময়দান

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (ছবি: গাজীপুর প্রতিনিধি)দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিনেও টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল অব্যাহত আছে। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত এই ঢল চলতে থাকবে। এরই মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বাদ ফজর থেকে লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশে বয়ান চলছে। পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে এ বয়ান চলবে রাত পর্যন্ত। জিকির-আসকার আর ইবাদতে মশগুল হয়ে আছেন তাবলিগ-জামাতের সবচেয়ে বড় জমায়েতে অংশগ্রহণকারীরা।

ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আমির প্রকৌশলী ওয়াসেফুল ইসলাম জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা।বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (ছবি: গাজীপুর প্রতিনিধি)

চলছে বয়ান

দুই দিন ধরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রয়েছেন মুসল্লিরা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর বয়ান করা হচ্ছে। তাবলিগের ছয় উসুলের (মৌলিক বিষয়ে) ওপর আলোচনা চলছে।

ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লি

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমার প্রথম দিনই ফিলিস্তিন, আফ্রিকা, আফগানিস্তান, তুরস্ক, জর্ডান, ভারত, লিবিয়া, লেবানন, যুক্তরাষ্ট্র, ইরাক, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৩৫ দেশ থেকে দেড় সহস্রাধিক মুসল্লি আসেন। ভাষাভাষী ও মহাদেশ অনুসারে আলাদা আলাদা খিত্তায় অবস্থান করছেন বিদেশি মেহমানরা।বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (ছবি: গাজীপুর প্রতিনিধি)

তাশকিল

ইজতেমা প্যান্ডেলের উত্তর-পশ্চিমে তাশকিলের কামরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি খিত্তায় তাশকিলের জন্য বিশেষ স্থান রাখা হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে আল্লাহর রাস্তায় বের হতে ইচ্ছুকরা নাম তালিকাভুক্ত করে সেখানে অবস্থান করছেন। কাকরাইল মসজিদের মুরব্বিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের দেশের বিভিন্ন এলাকায় দ্বীনের দাওয়াত কাজে পাঠানো হবে।

নিরাপত্তা ও যান চলাচল

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার বিকাল পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত, টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কের মিরেরবাজার থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত, কামারপাড়া থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত এবং বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত সব ধরনের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশ এলাকা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে। প্যান্ডেলের ভেতরে ও বাইরে মুসল্লি বেশে রয়েছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সহস্রাধিক সদস্য।বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (ছবি: গাজীপুর প্রতিনিধি)

বিশেষ ট্রেন

রেলওয়ে বিভাগ আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে আখাউড়া, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। ইজতেমায় আগত যাত্রীদের কথা বিবেচনায় রেখে টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে অতিরিক্ত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বারের বিশ্ব ইজতেমার দুটি পর্বের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি। এতে যোগ দেন মাওলানা জুবায়ের অনুসারী মুসুল্লিরা। ১৭ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের তিন দিনের ইজতেমায় যোগ দেন ভারতের নিজামুদ্দিন মারকাজের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভির অনুসারী মুসুল্লিরা।