ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের গৌরীপুরের কলাতাপাড়ায় বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে সাহারা বানু নিহত হন। এই দুর্ঘটনায় তিনিসহ ভাংনামারি ইউনিয়নের উজান কাশিয়াচর গ্রামের চার জন মারা যান।
রাজিয়া আরও জানান, ১৪ বছর আগে অসুস্থ হয়ে বাবা মারা যাওয়ার পর মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে এবং পরের সাহায্য সহযোগিতা এনে মা তাদের খাইয়ে বড় করেছে। বড় দুই ভাই বিয়ে করে এখন আলাদা থাকে। তাদের দুই বোনকেও বিয়ে দিয়েছেন পাশের গ্রামে। বোনরা মাঝেমধ্যে এসে মায়ের খোঁজ খবর নিলেও ভাই ও তাদের বউরা কোনও খোঁজ নেয় না। বুড়ো বয়সেও তার মা পরের বাড়ি কাজ করে যা পায় তা দিয়েই চলছিলেন। অবশেষে চেয়ারম্যান একটা বয়স্ক ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দিয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কাগজ জমা দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। বয়স্ক ভাতার কার্ডের কাগজ জমা দিতে গিয়ে এভাবে তার মা মারা যাবে এটা কিছুতেই মানতে পারছেন না তিনি।
প্রতিবেশী রমজান ফকির বলেন, ‘স্বামী আব্দুল হালিম মারা যাওয়ার পর মানুষের বাড়িঘরে কাজ করে সাহারা বানু ছেলেমেয়েদের বড় করেছেন। বড় হয়ে ছেলেরা মায়ের খোঁজ খবর নিতো না। মাঝেমধ্যে স্বামীর বাড়ি থেকে এসে দুই মেয়ে মাকে দেখতে আসতো। মারা যাওয়ার আগেও সাহারা বানু খুব কষ্ট করে গেছেন।’
গৌরীপুর ভাংনামারি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুন নূর খোকা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অনেকবার সাহারা বানু একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে এসেছেন। বেশ কয়েকবার তার সঙ্গেও দেখা করেছেন। তাকে কার্ড দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। পরে কার্ডের ব্যবস্থা হওয়ায় দুই দিন আগে তাকে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কাগজ জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। বুধবার দুপুরে ওই কাগজ জমা দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় সাহারা বানু মারা যাবে এটা খুবই দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে গৌরীপুরের কলতাপাড়ায় বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গৌরীপুরের উজান কাশিয়াচরের রাবেয়া খাতুন (৮০), রাবেয়ার পুত্র লাল মিয়া (৫৫), সাহারা বানু(৬৫) ও অটোরিকশা চালক রফিকুল ইসলাম (৫০) মারা যান।
আরও পড়ুন: গৌরীপুরে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৪