চট্টগ্রামে ‘স্মার্ট নগরী’ চান শাহাদাত, ‘শান্তিপূর্ণ’ পরিবেশের অঙ্গীকার রেজাউলের

চট্টগ্রামে নির্বাচনি প্রচারে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীচট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠতে শুরু করেছে। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ শুরু করেছেন। চট্টগ্রামকে ‘সুন্দর ও স্মার্ট’ নগরীতে পরিণত করতে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। আর নগরীকে ‘সন্ত্রাস, মাদক, জলাবদ্ধতামুক্ত এবং শান্তিপূর্ণ নগর’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী।

বুধবার নগরীর ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বহদ্দারহাট হক মার্কেটের সামনে থেকে গণসংযোগের সময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘গণতন্ত্র এখন ধ্বংসের পথে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে দেশমাতার মুক্তির বার্তা নিয়ে আমি হাজির হয়েছি আপনাদের দুয়ারে ধানের শীষের ভোট চাইতে। আমি চট্টগ্রামকে সুন্দর স্মার্ট নগরীতে পরিণত করতে ভোট যুদ্ধে নেমেছি। আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নেমেছি।’ তিনি ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, ‘নগরীর বিভিন্ন জায়গায় খবর পাচ্ছি প্রশাসনের লোকজন আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। ভোটের মাঠে সবাইকে সমান সুযোগ করে দিতে ইসির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের নেতাকর্মীদের ভোটের মাঠে হয়রানি করলে আমরা বসে থাকবো না, কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের সাংবিধানিক অধিকার শেষ হয়ে গেছে। ভোট ও রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। সরকার দিনের ভোট রাতে নেওয়ার কারণে মানুষ কেন্দ্রমুখী হচ্ছে না। আসুন চট্টগ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করি। সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে হবে যেন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বুথে গিয়ে ভোট দিতে না পারে।’

ভোটের দিন ৫টার মধ্যে ভোটের ফলাফল দিতে হবে উল্লেখ করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘অন্যথায় যে কোনও পরিস্থিতির জন্য সরকার এবং প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে। চট্টগ্রামের মানুষ শান্তিপ্রিয়। কিন্তু প্রয়োজনে চট্টগ্রামবাসী যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রাম থেকে সূচনা হয়েছে। সিটি নির্বাচনে কারচুপি হলে চট্টগ্রাম থেকে আন্দোলনের সূচনা হবে।’

এদিকে বুধবার নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদেরই সন্তান। এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের দাবিতে আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। নির্বাচিত হলে নগর পিতা হিসেবে নয়, আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে সেবার কাজ করব। চট্টগ্রামকে সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত, জলাবদ্ধতামুক্ত, শান্তিপূর্ণ নগর হিসেবে গড়ে তুলবো।’

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় গৌরব আর ঐতিহ্যের চট্টগ্রাম একটি সমৃদ্ধ নগরীর দিকে এগিয়ে চলেছে। এখানে জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি এক হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাল ও নালা সংস্কার, উদ্ধার ও খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ কাজগুলো সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা আর থাকবে না। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর লালখান বাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে শাহ আমানত সংযোগ সেতু চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। জনাকীর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জংশনে ওভার পাস নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে বারিক বিল্ডিং বিমানবন্দর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাস্তবায়নাধীন রয়েছে দেশের একমাত্র সুড়ঙ্গ সেতু কর্ণফুলী টানেল ও চাক্তাই কালুরঘাট রিভার ড্রাইভ রোড। এতসব উন্নয়নের বিড়ম্বনা, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ নগরীর ওপর রয়েছে। মেয়র নির্বাচিত হলে আমি সমন্বিত প্রয়াসে নগরীর মানুষের সর্বোচ্চ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করবো।’