করোনা আতঙ্কে রোগী নেই হাসপাতালগুলোয়

মৌলভীবাজার

করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের আশঙ্কায় রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে মৌলভীবাজার জেলা সদরসহ বিভিন্ন হাসপাতালগুলো। আগে বহির্বিভাগে কয়েকশ' রোগী চিকিৎসা নিতেন প্রতিদিন। সেখানে এখন জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে গড়ে মাত্র ১৫-২০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালে রোগী একেবারে নেই বললেই চলে। মৌলভীবাজার জেলাসদরসহ কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের সরকারি হাসপাতালগুলোতে এসব চিত্র দেখা গেছে।

তবে সিভিল সার্জন মো. তৌহিদ আহমদ জানান, স্থানীয়দের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য হটলাইন চালু করেছে হাসপাতালগুলো।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর বাবা মসু মিয়া জানান, করোনার আতঙ্কে আত্মীয়রা কেউই তার শিশুকে হাসপাতালে দেখতে আসেনি। রোগীশূন্য হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে অনেকটা ভয়েই আছেন তিনি। শিশুটি একটু সুস্থ হলেই হাসপাতাল থেকে চলে যাবেন।

উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিনিয়ত হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের রোগীর জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হতো। তবে করোনার আতঙ্কে প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরেই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা খুবই কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই এখন হাসপাতালে আসতে চান না।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক বলেন, ‘মানুষ দেরিতে হলেও এখন কিছুটা সচেতন হচ্ছে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই চিত্র দেখা গেছে। সোমবার মাত্র ছয় জন রোগী ভর্তি হলেও মঙ্গলবার সেখানে ছিল মাত্র একজন রোগী। সেদিন বিকালেই শিশুটির মা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান শিশুটিকে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডে একজন বৃদ্ধ শুয়ে আছেন। শ্বাসকষ্টজনিক সমস্যা তার। মহিলা ওয়ার্ডে দেখা যায়, নিউমোনিয়া আক্রান্ত কয়েকজন শিশু। কেউ দুদিন, কেউ তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি।

হাসপাতাল ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স হোসনা বেগম জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে হাসপাতালে রোগী নেই। দুজন আয়া,একজন ডাক্তার, একজন ক্লিনার ও দুজন নার্স নিয়োজিত আছি। মুখে শুধু মাস্ক পরেই তারা চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এখন হটলাইন চিকিৎসাসেবা চালু রয়েছে, ফলে মানুষ হাসপাতালে খুব কম আসে।’

তারা আরও জানান, মানুষজন অনেকটা ভয়ে রয়েছেন। তাই তারা হাসপাতালে আসতে অনিচ্ছুক।

মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন মো.তৌহিদ আহমদ বলেন, ‘প্রথমত, মানুষ ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন না। দ্বিতীয়ত, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দূর থেকে সাধারণ রোগীরা আসতে পারছে না। রোগীর সংখ্যা একেবারেই কম বললেই চলে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে চিকিৎসার পাশাপাশি হটলাইন সেবা চালু রেখেছি। যেকেউ মোবাইলে চিকিৎসা নিতে পারবেন।’