হতদরিদ্র ও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ বিতরণ

যশোর

করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকায় যশোরে হতদরিদ্র ও হোম কোয়ারেন্টিনের দরিদ্র মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। শনিবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে এই কার্যক্রম শুরু হয়। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, আলু ও সাবান।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে প্রতি ইউনিয়নে একশ' ব্যাগ করে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, হতদরিদ্রদের জন্য যশোরের ৮টি উপজেলা ও ৮টি পৌরসভায় একশ' মেট্রিকটন চাল এবং নগদ ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শুক্রবার প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বরাদ্দগুলো পাঠানো হয়। শনিবার সকালে উপজেলা থেকে সব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের কাছে একশ' প্যাকেট করে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেয়া হয়েছে। এরপর তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্রদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসন থেকে ২৫ টন চাল ও এক লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। তা দিয়ে সদরের ১৫টি ইউনিয়নের জন্য প্রতি ইউনিয়নে একশ ব্যাগ করে এবং যশোর পৌরসভার জন্য এক হাজার ব্যাগ ত্রাণ প্রস্তুত করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা হতদরিদ্রদের তালিকা করেছেন। ওই তালিকা অনুযায়ী সেগুলো তারা বাড়ি বাড়িতে পৌঁছে দেবেন।

যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা থেকে বরাদ্দ একশ' ব্যাগ ত্রাণ নিয়ে এসেছি এবং তালিকা অনুযায়ী বিতরণ শুরু করেছি।

ঘরে বসে চাল ডাল পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন হতিদ্ররিদ্ররা। জামাল নামে এক শ্রমিক বলেন, 'যশোর বিসিক-এ ববিন মিলে দিন হাজিরায় কাজ করতাম। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় হাতে কোনও টাকা পয়সা নেই। ঘরে ছেলে মেয়ে নিয়ে চারজন। এই দুরাবস্থার মধ্যে সরকারি ত্রাণ পেয়ে খুবই ভাল লাগছে।'

নাসরিন বেগম নামে অপর এক নারী জানান, তার স্বামী অসুস্থ। কাজ করতে পারেন না। তিনি বাসা বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এখন তো ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না। চাল শেষ হয়ে গেছে। আজ চাল না পেলে না খেয়ে থাকতে হতো। সরকারি চাল-ডাল পেয়ে তিনি খুব খুশি।

এদিকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে জেলায় সেনা টহল অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ঘরে থাকতে প্রচারণা চালাচ্ছেন।