কোয়ারেন্টিনে থেকেই প্রশাসন চালাচ্ছেন কর্মকর্তারা

 

 

নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের একজন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়েছে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জ সহ জেলার ঊর্ধ্বতন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে। সম্প্রতি বিভিন্ন সভা ও কার্যক্রমে ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে যাওয়ার কারণে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে তাদের। তবে তারপরও বসে নেই তারা। কোয়ারেন্টিনে থেকেো অনলাইনে এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশাসনিক কাজকর্ম চলিয়ে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তারা।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চত করেছেন।

জানা যায়, করোনা সংক্রান্ত ফোকাল পারসন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামও নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলমও আছেন কোয়ারেন্টিনে। তবে তারা টেলিফোনে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন সহকর্মীদের।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটিরও সভাপতি। মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে বুধবার তিনি তার বাংলোয় রেস্টে ছিলেন। বাংলো থেকেই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন দুপুরে তার করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠায়। এদিকে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজও কোয়ারেন্টিনে আছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন এবং জেলা করোনা ফোকাল পারসন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বুধবার অফিস করেননি।

কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে এসপি জায়েদুল আলম বলেন, ‘আমি সুস্থ আছি। আমি কোয়ারেন্টিনে নেই। তবে ডিসি ও সিভিল সার্জন একটু অসুস্থ। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের করোনা সন্দেহ হওয়ায় যেহেতু তার সংস্পর্শে ছিলাম, তাই বাড়িতেই অফিস করছি। আর এই মুহূর্তে আমাদের সবার সামাজিক দূরত্ব মেনে পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক বাড়িতে আছেন। জনসমাগম যাতে কম হয়, একারণে অফিসে কম সময় দেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের সব কাজ চলছে।’

করোনার নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘তিনি (ডিসি) কাশিসহ অসুস্থ অনুভব করেছিলেন। এ কারণে ভাবীর পরামর্শে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে তিনি এখন সুস্থ আছেন। চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।’

এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমি আসলে কোয়ারেন্টিনে আছি। বাসায় বসে অফিস করছি। টেলিফোনে নির্দেশ দিচ্ছি।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে করোনাবিষয়ক জেলা ফোকাল পারসন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আইসোলেশনে আছি। শরীর ভালো না, অসুস্থ। মুঠোফোনে যতটুকু পারছি, চালিয়ে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক নারীসহ ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ মোট ৪৬ জন। তারা আইইডিসিআরের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।