অবরুদ্ধ করা গ্রামগুলো হলো—জেলা সদর উপজেলার মালিহাতা, সরাইলের বেড়তলা, সিতাহরণ ও বড়ইছড়া এবং আশুগঞ্জের শান্তিনগর, বগইর, খরিয়ালা ও মৈশার।
এদিকে, এ ঘটনা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ব্যর্থতার দায়ে শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতেই সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহদাৎ হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। আজ সকালে প্রত্যাহার করা হয় সরাইল থানার ওসি (তদন্ত) নূরুল হক এবং সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাসুদ রানাকে।
করোনার ভেতর সব ধরনের ধর্মীয়, সামাজিক অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকলেও মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজা আয়োজনের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেয় তার অনুসারীরা। স্থানীয় প্রশাসন এ ঘটনায় বাধা না দেওয়ায় বিভিন্ন যানবাহনে করে লাখো জনতা জড়ো হয় জানাজায়। এতে বেড়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। আতঙ্কে আছেন আশপাশের গ্রামের মানুষরাও।
একই এলাকার বাসিন্দা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের দাপট দেখি খালি মাঠে। ভরা মাঠে তারা কী করে? আমরা বেশি কথা বললে আবার সমস্যা হবে।’
স্থানীয় মাজারের পরিচালক (খাদেম) দারুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাপারটি স্পর্শকাতর। করোনা ঝুঁকির মধ্যে এত লোক সমাগম হয়েছে, সবাই দেখেছে। স্থানীয় প্রশাসন তো কিছু করেনি। জেলা লকডাউন হওয়ার পর গ্রামের বাজারে এসে পুলিশ দোকানে বাড়ি দেয়, লাঠি চার্জ করে। এর দায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা এড়াতে পারেন না।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে বলেন, ‘জানাজায় জনসমাগমের ঘটনা তদন্ত করতে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন—চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পঙ্কজ কুমার ও আমি (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মাওলানা জোবায়ের আহমদ আনসারী। তিনি স্থানীয় বেড়তলা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষও ছিলেন। এছাড়া তিনি একাধিক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। ইসলামি আলোচক হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।