আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি মেরামত করে দিচ্ছেন সেনা সদস্যরা

প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি মেরামত করে দিচ্ছেন সেনা সদস্যরাআম্পানের তাণ্ডবে যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় গাছ পড়ে বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেনাপ্রধানের নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যরা। সেনা সদস্যরা আটটি দলে বিভক্ত হয়ে আট উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি চিহ্নিত করে মেরামত করে দিচ্ছেন। গত শুক্রবার (২২ মে) থেকে জেলার সব উপজেলায় একযোগে এ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দিচ্ছেন তারা।

শনিবার সকালে সেনা সদস্যদের একটি দল সদর উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকায় কাজ করেন। মেরামত কাজের নেতৃত্বে থাকা ক্যাপ্টেন কামরুল হাসান বলেন, ‘যশোর জেলায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। এজন্য সেনাপ্রধানের নির্দেশে ও যশোর সেনানিবাসের জিওসির তত্ত্বাবধানে কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রথমে বাড়ি মেরামত করার সামর্থ্য নেই এমন ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর তাদের বাড়িটি পুরোপুরি মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যাদের গবাদিপশু ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

তিনি জানান, শুক্রবার তারা ১০টি ঘর মেরামত করেছেন। শনিবার ২০টি বাড়ি মেরামত করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে কাজে নেমেছেন। যতক্ষণ প্রয়োজন তারা কাজ চালিয়ে যাবেন। 

সেনা সদস্যদের কাছ থেকে এ মানবিক সহায়তা পেয়ে খুশি ক্ষতিগ্রস্তরা। আব্দুর রহিম নামে একজন বলেন, ‘ঝড়েঘরটি পড়ে যায়। সামর্থ্য ছিল না ঠিক করার। সেনা সদস্যরা এসে ঘরটি মেরামত করে দিচ্ছেন। সঙ্গে খাবারও দিয়েছেন। এতে আমি খুব খুশি।’

জরিনা বেগম নামে অপর এক নারী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী একটি নাতিকে নিয়ে আমার সংসার। ঝড়ে ঘর পড়ে যাওয়া খুব চিন্তায় ছিলাম। সেনাবাহিনী এসে ঘর ঠিক করে দেওয়ার পাশাপাশি খাবারও দিয়েছে। এতে অনেক উপকার হয়েছে।’

সালাম হোসেন নামে অপর একজন বলেন, ‘ঝড়ে আমার গরুর গোয়াল উড়ে যায়। চারটি গরু ও দুটি ছাগল আহত হয়েছে। গতকাল সেনাসদস্যরা গোয়ালঘরটি নির্মাণ করে দিয়েছেন।’

যশোর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল নেয়ামুল জানিয়েছেন, ‘আমাদের যা কিছু আছে তাই দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার চেষ্টা করছি। দুই দিনে ১৪০টি ঘর মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় আগামী দুই সপ্তাহ ধরে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ’