সরকারি ব্রিজ বিক্রি!

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বুলু পিরোজপুরের নাজিরপুরে আয়রন ব্রিজের সরকারি পুরাতন মালামাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বেলায়েত হোসেন বুলু উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি।

এ ঘটনায় পুলিশ টমটমসহ মালামালগুলো জব্দ করেছে। ক্রেতা ইস্রাফিল বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।

বিষয়টি নিয়ে মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের ভাইজোড়া বাজার এলাকার বাসিন্দা অমিত হাসান, সুজন ইসলাম ও রিয়াদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের। তারা জানান, শুক্রবার সকালে উপজেলার তারাবুনিয়া বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে থাকা আয়রন ব্রিজের লোহার ৮৮০ কেজি মালামাল ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু অবৈধভাবে বিক্রি করে দেন।

ক্রেতা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গহরডাঙ্গা গ্রামের মৃত সিরাজ শেখের ছেলে ইস্রাফিল শেখ। তিনি মালামালগুলো টমটম করে নিয়ে যাওয়ার সময় সকাল ১১টার দিকে স্থানীয়রা মালামালসহ টমটমটি আটক করে।

আটকের পর ইস্রাফিল আমাদের জানান, মালামালগুলো তিনি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বুলু কাছ থেকে ১৯ হাজার ৬০০ টাকায় কিনেছেন। এ সময় ইসরাফিল মোবাইলে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে সরকারি মালামাল বিক্রির কথা স্বীকার করেন। ক্রেতাকে সেগুলোসহ ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

খবর পেয়ে ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া ও মাটিভাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে হাজির হন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদেও ইস্রাফিল সরকারি মালামাল কেনার কথা স্বীকার করেন। তবে প্রশাসনের কাছে এগুলো বিক্রির ব্যাপারে কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি চেয়ারম্যান। তবে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে মুঠোফোনে বিক্রির বিষয় অস্বীকার করে বলেন, মেরামতের জন্য নিচ্ছিলেন এসব মালামাল। 

স্থানীয় বাসিন্দা অমিত হাসান বলেন, ‘আমরা এ ঘটনায় প্রশাসনের সামনেই বিক্ষোভ করে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করেছি।’

নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম জানান, টমটমসহ মালামালগুলো পুলিশ জব্দ করেছে। জব্দকৃত ওই মালামাল ও ক্রেতা ইস্রাফিল বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া জানান, এসব মালামাল ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষণের যে নিয়ম রয়েছে তা পালন করা হয়নি। তাছাড়া উপজেলা নিলাম কমিটির অনুমোদন ছাড়া সরকারি কোনও মালামাল বিক্রির সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান যা করেছেন তা অবৈধ বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।

ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান জানান, সরকারি কোনও মালামাল উপজেলা পরিষদের নিলাম কমিটির অনুমোদন ছাড়া বিক্রির সুযোগ নেই। তবে চেয়ারম্যান সে নিময় না মেনে অবৈধভাবে মালামালগুলো বিক্রি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হচ্ছে। এ ঘটনায় সরকারের পক্ষে এলজিডির নাজিরপুর কার্যালয়ের উপ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল গাফফার মামলা দায়ের করেছেন।